বাংলাদেশ: ১২৪/১০ (১৯.২)
আয়ারল্যান্ড: ১২৬/৩ (১৪ ওভার)
ফল: আয়ারল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী।
জয়ের ধারা ধরে রাখতে পারল না বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে শেষ টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডের কাছে ৭ উইকেটে হেরেছে স্বাগতিকেরা। প্রথম দুই ম্যাচে দাপুটে জয়ের পর শেষ টি-টোয়েন্টিতে সেটা ধরে রাখতে ব্যর্থ বাংলাদেশ। আজ জিতে ধবলধোলাই এড়িয়েছে আয়ারল্যান্ড।
আরও পড়ুন- রোকাইয়াকে বাঁচাতে প্রয়োজন ৪ লাখ টাকা
ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি উভয় সিরিজেই দাপট ছিল বাংলাদেশের। ওয়ানডেতে এক ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেলেও বাকি দুটোতেই রেকর্ড গড়ে জিতেছিল টাইগাররা। আর টি-টোয়েন্টিতেও প্রথম দুই ম্যাচে আইরিশদের রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছিল সাকিবের দল। কিন্তু শেষ ম্যাচে এসে মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখেছে স্বাগতিকরা। রেকর্ডময় এক সিরিজের শেষটা হয়েছে তাই নীল। ঘরের মাঠে প্রথমবারের মত কোনো ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেছে বাংলাদেশ। ৭ উইকেটের বড় হারে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হল স্বাগতিকদের।
আগে ব্যাটিং করতে নেমে আজ ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। রীতিমতো অসহায় আত্মসর্মপণ করেছেন সাকিব-শান্তরা। তবে এদিন ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে একাই লড়েছেন শামীম, তার ব্যাটে ভর করেই ১২৪ রানের পুঁজি পায় স্বাগতিকরা। জবাবে ১৪ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আইরিশরা।
আরও পড়ুন- শামীমের ফিফটিতে ভর করে ১২৫ রানের লক্ষ্য দিলো বাংলাদেশ
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় শুরুটা ভালোই করেছিল আয়ারল্যান্ড। দুই আইরিশ ওপেনার প্রথম ওভার থেকেই আক্রমণাত্মক খেলেছেন। তবে খুব বেশি দূর এগোতে পারেননি রস অ্যাডায়ার। এই ওপেনারকে সাজঘরে ফিরিয়ে আইরিশ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ। ইনিংসের তৃতীয় ওভারের চতুর্থ বলটি স্টাম্পের ওপর ইয়র্কার করেছিলেন তাসকিন, তাতেই উইকেট ভেঙেছে অ্যডায়ারের। ৭ রান করে এই ওপেনার ফিরলে ভাঙে ১৭ রানের উদ্বোধনী জুটি।
অ্যডায়ার ফিরে গেলেও আরেক ওপেনার স্টার্লিং এদিন দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। তবে সুবিধা করতে পারেননি লরকান টাকার। দীর্ঘদিন পর দলে ফেরা শরিফুল ইসলাম শুরুটা করেছেন স্বপ্নের মতো। ষষ্ঠ ওভারে আক্রমণে এসে প্রথম বলেই উইকেটের দেখা পেয়েছেন। তার খাটো লেন্থের বলে পুল করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ৪ রান করা টাকার।
আরও পড়ুন- আইরিশদের হারিয়ে টি-টোয়েন্টিতে সিরিজ জয় টাইগারদের
এরপরের গল্পটা শুধুই স্টার্লিংয়ের। এই ওপেনার এদিন ঝড় তুলেছেন জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। তাতে উড়ে গেছে বাংলাদেশের বোলাররা। ছোট সংগ্রহ ডিফেন্ড করতে গিয়ে এক স্টার্লিংয়ের কাছেই যেন অসহায় ছিলেন তাসকিন-হাসানরা। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ৩১ বলে স্পর্শ করেছেন হাফ সেঞ্চুরি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ৭৭ রানের ইনিংস। এই অভিজ্ঞ ওপেনারকে সাজঘরে ফিরিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের অভিষেক উইকেট শিকার করেছেন রিশাদ হোসেন।
এরপর ক্যাম্পারকে সঙ্গে নিয়ে বাকিটা পথ নিরাপদেই পাড়ি দিয়েছেন ট্যাক্টর। শেষ পর্যন্ত ১৪ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আইরিশরা। এই ম্যাচ হারলেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ২০ ওভারের ৪ বল আগেই বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১২৪ রানে। ধবলধোলাই এড়াতে হলে আইরিশদের করতে হবে ১২৫ রান। এদিন পাওয়ার প্লের মধ্যেই ৪১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। একে একে আউট হন লিটন দাস (৫), নাজমুল হোসেন শান্ত (৪), রনি তালুকদার (১৪) ও সাকিব আল হাসান (৬)। এরপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি স্বাগতিকেরা। উল্টো নিয়মিত বিরতিতে একের পর এক উইকেট হারিয়েছে।
আরও পড়ুন- আ.লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক হলেন মাশরাফী
সুবিধা করতে পারেননি তাওহীদ হৃদয় (১২)। খাদের কিনারা থেকে শামীম হোসেন পাটোয়ারির সঙ্গে দলকে টেনে তুলতে চেষ্টা করেন অভিষিক্ত রিশাদ হোসেন। দুজনের জুটিতে যোগ হয় ২০ রান। এক ছক্কায় ৮ রান করে আউট হন রিশাদ। তবে অষ্টম উইকেটে নাসুম আহমেদকে নিয়ে বোলারদের জন্য লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন শামীম।
শামীম-নাসুমের জুটিতে যোগ হয় ৩৩ রান। শামীমকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া নাসুম ১৭ বলে এক চারে ১৩ রান করে আউট হন। তবে এক প্রান্তে সময়োপযোগী দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেছে শামীম। শেষ দ্বিতীয় বলে আউট হওয়ার আগে ৫১ রান করেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে এটিই প্রথম ফিফটি শামীমের। ৪২ বলের ইনিংসটি সাজানো ৫ চার ও ২ ছক্কায়। শেষ পর্যন্ত ইনিংসটা অবশ্য দলের জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়নি।