বিশ্বকাপের হট ফেভারিট ব্রাজিলকে টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে রাশিয়া বিশ্বকাপের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া।
ব্রাজিলকে গোটা ম্যাচ জুড়ে আটকে রেখেছিলেন ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক ডমিনিক লিভাকোভিচ। নির্ধারিত ৯০ মিনিট পর্যন্ত ৯টি সেভ দিয়ে ব্রাজিলের আক্রমণভাগকে নিষ্ক্রিয় করে রাখেন একাই। আর তাতেই খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। গোটা ম্যাচজুড়ে দুর্দান্ত খেলা এক নেইমারেরই তিনটি শট রুখে দেন লিভাকোভিচ।
তবে অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের শেষ দিকে এসে লিভাকোভিচ আর আটকে রাখতে পারেনি সাম্বা নৃত্যকে। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে লুকাস পাকুয়েতার কাছ থেকে বল পেয়ে ডি বক্সের ভেতর ক্রোয়াট গোলরক্ষকে কাটিয়ে দারুণ এক গোল করেন নেইমার জুনিয়র।
আরও পড়ুন- বড়াইগ্রামে সোনালী ব্যাংকের আউটলেট উদ্বোধন
ঠিক যখনই ব্রাজিলিয়ানদের সাম্বা নৃত্যের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল ঠিক তখনই ক্রোয়াটদের অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন। ম্যাচের ১১৭তম মিনিটে প্রতি আক্রমণ থেকে দুর্দান্ত এক গোল করে ক্রোয়াটদের সমতায় ফেরান ব্রুনো পেটকোভিচ। আর তাতেই ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
টাই ব্রেকারে ব্রাজিলের প্রথম শট নিতে আসেন রদ্রিগো। আর তার শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন ডমিনিক লিভাকোভিচ। আর নিজেদের চারটি শটেই গোল করে ক্রোয়েশিয়া। এরপর চতুর্থ শট নিতে আসেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মার্কুইনোহস। আর তার শট গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসলে ব্রাজিলের হেক্সা মিশন শেষ হয়। আর ক্রোয়েশিয়া পৌঁছে যায় সেমিফাইনালে।
এর আগে ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়ার মধ্যকার কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথমার্ধে দুই দলই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে এসে ব্রাজিলের একপেশে আক্রমণের জবাব ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষক ডমিনিক লিভাকোভিচ একাই দিয়েছেন। ব্রাজিলের মুহূর্মুহ আক্রমণ একাই রুখে দিয়েছেন ক্রোয়াট গোলরক্ষক। একাই করেছেন ৯টি সেভ। আর তাতেই খেলার নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোল পায়নি ব্রাজিল। অন্যদিকে গোল করতে পারেনি ক্রোয়েশিয়াও। এতেই ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হয় গোলশূন্যতে। আর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
দুই দলই ম্যাচের শুরু থেকে বলের দখল নেওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। তবে কেউই বেশি সময় বল দখলে রাখতে পারছিল না। দারুণ লড়াইয়ে কিছুটা এগিয়ে ছিল লুকা মদ্রিচ, মাতেও কোভাচিচদের নিয়ে গড়া মধ্যমাঠ। আর তাতেই ব্রাজিলের আক্রমণকে নিষ্ক্রিয় থাকতে হয়েছে।
আরও পড়ুন- মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে সতর্ক করলেন কৃষিমন্ত্রী
খেলার আর মিনিট আটেক বাকি থাকতে রদ্রিগোর বাঁ দিক থেকে আসা ক্রস হেড করেন রিচার্লিসন তবে তা গোলপোস্টের ওপর দিয়ে বেরিয়ে গেলে হতাস হয় ব্রাজিল। শেষ দিকে আরও একটি সুযোগ হাতছাড়া করে ব্রাজিল এতেই নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হয় গোলশূন্যতে। আর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ের ১০৫ মিনিটে নেইমার গোল করলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। তবে অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে পেটকোভিচের দুর্দান্ত গোলে ম্যাচে সমতায় ফেরে ক্রোয়েশিয়া। এতেই খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।
এডুকেশন সিটি স্টেডিয়াম যেন সাবেক চ্যাম্পিয়নের বধ্যভূমি। এই স্টেডিয়ামেই নক আউটে বিদায় হয়েছিল স্পেন। টাইব্রেকারে আফ্রিকার মরক্কোর বিপক্ষে হেরেছিল একবারের চ্যাম্পিয়ন স্পেন। সেই এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামই আরেক চ্যাম্পিয়ন বধ হলো। সেই টাইব্রেকারেই। স্পেন মরক্কোর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কোনো গোলই করতে পারেনি। ব্রাজিল অবশ্য চার শটের মধ্যে দু’টি গোল করে। চতুর্থ শটে মারকিনিয়োস মিসের শট পোস্টে সাইড পোস্টে লাগার সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়ে ক্রোয়েশিয়া।