খুলনা মহানগরীর খালিশপুরে কিশোরীকে গণধর্ষণ মামলায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা করে তাদের জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এর বিচারক আব্দুস ছালাম খান এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- আলী আকবর ওরফে হৃদয়, মেহেদী হাসান ওরফে ইবু, সোহেল, আব্দুল্লাহ ও মোহন।
এ সময় সাজাপ্রাপ্ত দু’জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকি তিনজন পলাতক।
ওই আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ফরিদ আহমেদ গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ সন্ধ্যায় খালিশপুর ১ নং বিহারী ক্যাম্পে ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরী বাড়ির পাশে একটি টিউবওয়েলে পানি নিতে গেলে মোহন নামের এক যুবক তাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে শিয়া মসজিদের এলাকায় গেলে সেখান থেকে আকবর আলী নামে আরেকজন তার সাথে যোগ হয়। এরপর মোহন ও তার বাকি সঙ্গিরা চরেরহাট কলাবাগানে ভিকটিমকে নিয়ে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ৫ জন মিলে মেয়েটির উপর পাশবিক নির্যাতন করেন। ভিকটিম অসুস্থ্য হয়ে পড়লে আসামিরা তাকে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ির পাশে একটি মসজিদের রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে যায়। এসময় আসামিরা ভিকটিমকে হুমকি দেয় যদি এ ব্যাপারে মামলা করে বা কাউকে বলে তাহলে তার জীবন শেষ করে দেবে। পরবর্তীতে ভিকটিম বিষয়টি পরিবারকে জানালে পরিবার তাকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে এবং পুলিশের সহায়তায় মামলা করা হয়।
আদালত সূত্র জানায়, ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে খালিশপুর থানায় মামলা করেন। একই বছরের ২০ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কাজী রেজাউল করিম পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন। এই মামলায় পাঁচজন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পিপি ফরিদ আহমেদ বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করলেও যেন তাদের এই রায় বহাল থাকে সেই প্রত্যাশা করি।