গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর রমনা ও পল্টন থানায় হওয়া ৯ মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে জামিন দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন পৃথক আদেশে ১০ হাজার টাকা বন্ডে মির্জা ফখরুলের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
দুপুরে ফখরুলের পক্ষে করা জামিন আবেদনের শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে আদালত নথি পর্যালোচনায় আদেশের জন্য রাখেন। পরে সবগুলো মামলায় জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
আরও পড়ুন— আমার নয়, এটি জনগণের বিজয়ঃ শেখ হাসিনা
এর আগে আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) তাকে এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো (শ্যোন অ্যারেস্ট) হয়। একইসঙ্গে জামিন শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন একই আদালত।
আজ দুপুরে মির্জা ফখরুলের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট মহসীন মিয়া, মোঃ আসাদুজ্জামান, ওমর ফারুক ফারুকী ও জয়নুল আবেদীন মেজবাহ প্রমুখ।
অপর দিকে রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করে শুনানি করেন ঢাকা মহানগর অতিরিক্ত পিপি তাপস কুমার পাল, শাহ আলম, মনিরুজ্জামান মনির, মকবুল হোসেন ও আব্দুর রহমান। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। প্রতিটি মামলায় ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন— দিনের ভোট রাতে দিয়েছে— এবার বলার সুযোগ নেইঃ প্রধানমন্ত্রী
মির্জা ফখরুলের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন মেজবাহ জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আজ প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিন নামঞ্জুর হওয়ায় এবং পল্টন থানার আরেকটি নাশকতার মামলায় জামিন না হওয়ায় এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না তিনি।
এর আগে গত ৩১ ডিসেম্বর জামিন আবেদন করার পর প্রত্যেক মামলায় জামিন শুনানির জন্য গতকাল দিন ধার্য করা হয়। ওই দিন মির্জা ফখরুলকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। মির্জা ফখরুলের পক্ষে জামিন শুনানি করেন তাঁর আইনজীবীরা। কিন্তু মামলাগুলোয় এর আগে মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার না দেখানোর ফলে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান সোহাগ উদ্দিন আইনজীবীদের আগে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করতে বলেন।
মির্জা ফখরুলের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ৯ মামলায় মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। আদালত গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করে আজ আবার জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন।
রাজধানীর পল্টন থানায় দায়ের করা ছয় মামলা ও রমনা থানায় দায়ের করা তিন মামলায় মির্জা ফখরুলের জামিনের আবেদন করা হয়।
এই মামলাগুলোয় দেখা যায়, প্রত্যেকটি মামলায় মির্জা ফখরুলের নাম রয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সংঘর্ষের ঘটনায় এসব মামলা দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন— গাজীপুরে দুর্বৃত্তের আগুন দেওয়া ২ বিদ্যালয়েও চলবে ভোট
জানা গেছে, পুলিশ কনস্টেবল পারভেজ হত্যা মামলা, পুলিশের অস্ত্র ছিনতাইয়ের, যানবাহন ভাঙচুরের অভিযোগে পল্টন ও রমনা এলাকার এসব ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়।
২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় রমনা থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করে মির্জা ফখরুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।
২৯ অক্টোবর সকালে গুলশানের বাসভবন থেকে মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার করে ওই দিনই আদালতের মাধ্যমে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করার পর ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করা হলে সেখানেও জামিন নামঞ্জুর হয়। পরে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করা হলে হাইকোর্ট ৭ ডিসেম্বর কেন জামিন দেওয়া হবে না—এই মর্মে রুল জারি করেন। আজ হাইকোর্ট জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন বলে জানা গেছে।
জামিন আদেশের পর মির্জা ফখরুলের আইনজীবীরা আদালতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।