ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে বাংলাদেশে সীমিত পরিমাণে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। বাংলাদেশ ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশেও সরকারিভাবে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। গতকাল রবিবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বে মন্ত্রীদের কমিটি এ অনুমোদন দেয়।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দেশটির ইংরেজি দৈনিক ইকোনমিক টাইমস সহ হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানাগেছে।
বাংলাদেশ ছাড়াও অন্য যেসব দেশে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারত, সেসব দেশ হলো নেপাল, ভুটান, বাহরাইন এবং মৌরিশাস।
আরও পড়ুন— রামগঞ্জ প্রেস ক্লাবের নির্বাচনে সভাপতি তাহের; সাধারণ সম্পাদক কাউছার
সেই সঙ্গে কমিটি ৩ লাখ মেট্রিক টন পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দেয়। সরকারের এ সিদ্ধান্তকে এরই মধ্যে স্বাগত জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের কৃষকরা। তারা আন্তর্জাতিক বাজারে ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন।
পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতির এই বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভারতীয় এক কর্মকর্তা বলেছেন, দ্বিপাক্ষিক উদ্দেশে সীমিত পরিমাণে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে নেওয়ার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি নয়াদিল্লি।
দেশটির সরকার কী পরিমাণ পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে, সেই বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য ওই কর্মকর্তা জানাতে পারেননি বলে জানিয়েছে ইকোনমিক টাইমস।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অন্যতম কারণ হলো গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজের বিশাল মজুদ রয়েছে।
দেশটির সরকারের এমন ঘোষণায় রোববার থেকে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। বাজারে প্রতি ১০০ টনে ১০০ রুপি কমেছে।
আরও পড়ুন— রাজপথ আমাদের, ভয় দেখাবেন নাঃ ওবায়দুল কাদের
মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ উৎপাদনকারী কৃষক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ভারত দিঘোল বলেছেন, রপ্তানি শুরু হলে আমরা আশা করছি আন্তর্জাতিক বাজারে ভালো দাম পাব।
মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিস বলেছেন, পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ!
এর আগে, পবিত্র রমজান মাসে দেশের বাজারে মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে নির্দিষ্ট পরিমাণে পেঁয়াজ ও চিনি রপ্তানি করতে ভারতের সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি লেখে বাংলাদেশ সরকার।
বিশ্ব বাজারের দ্বিতীয় বৃহত্তম পেঁয়াজ রপ্তানিকারক ভারত। গত বছরের ডিসেম্বরে স্থানীয় বাজার স্থিতিশীল রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটির সরকার। জাতীয় নির্বাচনের আগে ভারতের বাজারে ক্রমবর্ধমান মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ ও পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে দ্বিতীয় দফায় আগামী মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ায় দেশটি।
আরও পড়ুন— হামাসের ৫ হাজার রকেট নিক্ষেপ, ‘যুদ্ধ পরিস্থিতি’ ঘোষণা ইসরায়েলের
রপ্তানি নিরুৎসাহিত করতে দেশটির সরকার প্রথমে পেঁয়াজের ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। তারপরও আশানুরূপ ফল না মেলায় পেঁয়াজের রপ্তানি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে ভারত।
রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখার বিষয়ে সুপারিশ করার আগে ভারতের সরকারি কর্মকর্তাদের একটি দল চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের প্রধান পেঁয়াজ উৎপাদন এলাকা পরিদর্শন করেন।