সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এই আইনের আওতায় বিশেষ বিবেচনায় পঞ্চশের ওপরে বয়স্ক নাগরিকরাও পেনশন স্কিমে অংশ নিতে পারবে। শুধু তাই নয়, প্রবাসী কর্মজীবীরাও এই পেনশনের আওতায় অংশ নিতে পারবেন।
প্রজ্ঞাপন জারির পর এই পেনশন স্কিমের আওতায় স্বেচ্ছায় যে কোনো প্রতিষ্ঠান আসতে পারবে। অন্য দিকে সরকারি, আধা সরকারি-স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থার ক্ষেত্রে আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত এই পেনশনের আওতা বহির্ভূত থাকবে বলে গেজেটে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় আরেকটি মাইলফলক ‘পাতাল মেট্রোরেল’: প্রধানমন্ত্রী
গত ২৪ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে এ সংক্রান্ত বিলটি অনুমোদন দেওয়া হয়। সংসদে ‘সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন ২০২৩’ এর বিলটি উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গত ৩১ জানুয়ারি আইনটিতে সম্মতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ।
আইনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গেজেটে বলা হয়েছে, দেশের সর্বস্তরের জনগণের বিশেষত গড় আয়ু বাড়ার কারণে ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতাভুক্ত করা প্রয়োজন এবং ভবিষ্যতে কর্মক্ষম জনসংখ্যা হ্রাসের কারণে নির্ভরশীলতার হার বাড়বে- এ কারণে সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক বিষয়ে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়।
আরও পড়ুন- আবারও বাড়ল বিদ্যুতের দাম
আইন অনুযায়ী, জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে ১৮ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়স থেকে ৫০ বছর বয়সী সব বাংলাদেশি নাগরিক পেনশন স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। যিনি ধারাবাহিকভাবে ১০ বছর চাঁদা প্রদান করবেন তিনি পেনশন পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবেন এবং চাঁদাদাতার বয়স ৬০ বছর পূর্তিতে পেনশন তহবিলে পুঞ্জিভূত মুনাফাসহ জমার বিপরীতে আজীবন পেনশন প্রদান করা হবে; পঞ্চাশোর্ধ্বরা ১০ বছর চাঁদা প্রদান শেষে যে বয়সে উপনীত হবেন সেই বয়স থেকে আজীবন পেনশন পাবেন; প্রত্যেক চাঁদাদাতার জন্য একটি পৃথক ও স্বতন্ত্র পেনশন হিসাব থাকবে এবং কর্মস্থল পরিবর্তন হলেও নতুন হিসাব খোলার প্রয়োজন হবে না। কর্তৃপক্ষ থেকে সর্বনিম্ন চাঁদার হার নির্ধারণ করা হবে; মাসিক চাঁদা প্রদানে দেরি হলেও বিলম্ব ফিসহ পেনশন হিসাব চালু রাখা যাবে।
আইনে বলা হয়েছে, ৭৫ বছরের আগে কোনো পেনশনার মারা গেলে পেনশনারের নমিনি অবশিষ্ট সময়কালের পেনশন প্রাপ্য হবেন; ১০ বছর চাঁদা প্রদানের আগে কোনো পেনশনার মারা গেলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ নমিনিকে দেওয়া হবে; কোনো প্রয়োজনে চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জমাকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে নেওয়া যাবে এবং নির্ধারিত ফিসহ তা পরিশোধ করতে হবে; বিনিয়োগ বিবেচনায় চাঁদা কর রেয়াতযোগ্য বলে বিবেচিত হবে এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে।