বাঙালি মানেই ভোজন রসিক… পঞ্চব্যঞ্জনে ভুরিভোজে বাঙালী সর্বদা এগিয়ে। খাদ্য রসিক বাঙালির ভুরিভোজের জন্য কোনো পার্বনের প্রয়োজন নেই। খাবার ব্যাপারে বাঙালীর কোনো না নেই। আমিষ-নিরামিষ, মাছ, মাংস, টক, ঝাল, মিষ্টি যে কোনো কিছু দিয়েই তারা সারতে পারে ভুরিভোজ। বাঙালি মাত্রেই খাদ্য প্রেমিক আর সেই জন্যই কোথায় কোন সেরা খাবার পাওয়া যায় তা তাদের নখদর্পনে।
আরও পড়ুন— পান্তা মূলত কৃষি সভ্যতার জীবনের অংশ
এর পর যদি কোনো উৎসব থাকে তবে আর দেখে কে? উৎসবের মরসুমে মনের সুখে রসে-বসে চলে বাঙালির ভুরিভোজ। কব্জি ডুবিয়ে ভুরিভোজে বাঙালির বিশেষ নৈপুণ্য আছে, পোলাও থেকে শুরু করে ভাত, মাছ, মাংস, ভর্তা বা চচ্চড়ি, আর শেষ পাতে যদি পাওয়া যায় একটু মিষ্টি তবে ভুরিভোজে বাঙালী পায় সেরা তৃপ্তি। এককথায় খাবারের প্রতি বাঙালির একটা জন্মগত দুর্বলতা আছে আর ভুরিভোজ কথাটা আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে বাঙালির জীবনে। রকমারি মশলাদার খাবার বাঙালির খুব প্রিয়। অতীতে স্বচ্ছল বাঙালির রান্নাঘর ছিলো উৎসব মঞ্চ। বৃষ্টি হলে খিঁচুড়ি, শীতে নানা রকম সব্জি, পিঠে, পায়েস, বাঙালির ভুরিভোজের সঙ্গী।
এ উপমহাদেশের মানুষের কাছে নানা রকম খাবারের ভিড়ে সবচেয়ে বেশি সমাদৃত বিরিয়ানি। মুখরোচক এ খাবারের স্বাদ নিয়ে কোনো কথা বলাই বাহুল্য। তবে অনেক সময় বাড়িতে বিরিয়ানি তৈরি করতে গেলে বিপাকে পড়তে হয় অনেককেই। ঠিক কোথায় যেন একটু গরমিল থেকেই যায়। স্বাদে পরিপূর্ণতা আসে না ঠিকঠাক। জেনে নিন বিরিয়ানির স্বাদ বাড়ানোর গোপন কৌশলগুলো-
চাল ভিজিয়ে রাখা-
রান্নার আগে বিরিয়ানির চাল ভালো করে ধুয়ে অন্তত ৩০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখা উচিত। এটি করলে ভাতকে নরম হওয়া থেকে অনেকটা বাঁচানো যায়। রান্নার সময় চালের পানি শোষণ করার ক্ষমতা কমাতে সাহায্য করে। ফলে বিরিয়ানি আঠালো বা একেবারে নরম হয় না।
আরও পড়ুন— পরিবেশ নিয়ে আমরা কতটা সচেতন?
ভাত বেশি সময় নিয়ে রান্না না করা-
ভাত বেশি সময় ধরে রান্না করবেন না। যখন চাল সিদ্ধ করছেন, তখন অতিরিক্ত সিদ্ধ করবেন না। প্রায় পাঁচ মিনিট ফুটানোর পর চামচ ব্যবহার করে কিছু চাল বের করে নিন। সব চাল অর্ধেক সিদ্ধ বা কিছু কাঁচা রয়েছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখুন। এর ফলে সঠিক মাত্রায় চাল সিদ্ধ হবে। ভাত গলে যাবে না।
লেবুর রসের ব্যবহার-
কেউ কেউ ভাত রান্না করার সময় লেবুর রসও ব্যবহার করেন। এতে চাল একটার সঙ্গে আরেকটা লেগে যায় না। লেবুর রস ছাড়াও ‘হাণ্ডি’ বা পাত্রের নিচে তেজপাতা রাখতে পারেন। তবে নিচের অংশে রাখার জন্য খুব বেশি তেজপাতা ব্যবহার করবেন না। কারণ তেজপাতার ঘ্রাণ প্রবল হয়ে বিরিয়ানিতে আসতে পারে।
আরও পড়ুন— কখন লাউ চাষ করবেন?
পরিমাপ অনুযায়ী দই-
মেরিনেশনে ব্যবহৃত দইয়ের পরিমাণ খুব বেশি হওয়া উচিত নয়। দই বেশি হলে রান্নার সময় ভাত তলানিতে লেগে যেতে পারে। তাই সঠিক পরিমাপ বজায় রেখে দইয়ের ব্যবহার করবেন।
বিরিয়ানির পাত্র বড় হওয়া উচিত-
বিরিয়ানি রান্নার পাত্রটি যথেষ্ট বড় হওয়া উচিত, যাতে এটি রান্নার জন্য ভাতকে যথেষ্ট জায়গা দেয়। না হলে বিরিয়ানি নিচে লেগে যাবে।