ঘরে এসে সিরিজ হারিয়ে গেছে আফগানিস্তান। ওই সিরিজই বিশ্বকাপ ম্যাচ নিয়ে বাড়তি হাইপ তুলেছে। হাইপ ওঠা ওই ম্যাচে ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে পানসে বানিয়ে ছেড়েছে বাংলাদেশ। ৬ উইকেটের বড় জয়ে শুরু করেছে বিশ্বকাপ মিশন।
ধর্মশালায় রং লেগেছে— বিশ্বকাপের রং। রং লেগেছে হয়তো ঢাকায় অথবা পুরো বাংলাদেশে। শঙ্কার মেঘে ঢেকে যাওয়া আকাশে সূর্য উঠেছে পাহাড়ের বুকে এসে। গ্যালারিতে ঢোল-তবলার বাড়িতে ফেটে পড়ছে উচ্ছ্বাস। পাহাড়ের মায়াবী সৌন্দর্য দেশের ক্রিকেটেও। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বড় স্বপ্নের শুরু হয়েছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয়ে। ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগেই আফগানদের স্রেফ গুঁড়িয়ে দিয়েছে টাইগাররা।
আরও পড়ুন— রামগড়ে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালিত
শনিবার ধর্মশালা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে বল করতে নামে বাংলাদেশ। দুই আফগান ওপেনার ভালো শুরু করলেও ৩৭.২ ওভারে ১৫৬ রানে অলআউট হয়ে যায়। জবাব দিতে নেমে শুরুতে দুই উইকেট হারায় বাংলাদেশও। তিনে নামা মেহেদী মিরাজ ও চারে নামা নাজমুল শান্ত ওই ধাক্কা সামলে দলকে জয়ের প্রান্তে তুলে নেন। পরে মিরাজ ফিরলেও ফিফটি করে ম্যাচ জিতিয়ে ফেরেন শান্ত।
এর আগে দুই আফগান ওপেনার রহমানুল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান ৪৭ রানের জুটি দেন। সাবলীল শুরু করা ওই জুটি ভাঙতে সপ্তাম ওভারে বল হাতে নেন সাকিব আল হাসান। দলকে দরকারী ব্রেক থ্রু দেন।। তরুণ ওপেনার ইব্রাহিমকে ২২ রানে ক্যাচে পরিণত করেন তিনি। এরপর রহমত শাহকেও (১৮) তুলে নেন বাঁ-হাতি স্পিন অলরাউন্ডার সাকিব।
আরও পড়ুন— শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালের আংশিক উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
আফগানিস্তানের পরের ব্যাটাররা থেকেছেন কেবল আসা-যাওয়ার মিছিলে। শেষ আট উইকেট তারা হারায় মাত্র ৪৬ রানে। ১১২ রানে দুই উইকেট থেকে গুটিয়ে যায় ১৫৬ রানে এসে। সাকিব পরে উইকেট পান আরও একটি। মেহেদী হাসান মিরাজও তার সমান উইকেট নেন, ৯ ওভারে দেন কেবল ২৫ রান। পেসারদের চার উইকেটের মধ্যে শরিফুল দুই আর তাসকিন ও মোস্তাফিজ নেন এক উইকেট করে।
বাংলাদেশ যখন জবাব দিতে নামলো, ওখানেও শুরুতে হতাশাই ছিল। তানজিদ হাসান তামিম রান আউট হয়েছেন খুবই অদ্ভূতভাবে। পরে লিটন দাস যখন ফিরলেন, একটু ভয় ভয়ও হয়তো হচ্ছিল সবার। কিন্তু ছিলেন একজন, এখন তিনি অবশ্য এখন নিয়মিতই থাকছেন বেশ ভালোভাবে- মেহেদী হাসান মিরাজ। উদাহরণটা ঠিকঠাক হলো কি না কে জানে, তবে বাংলাদেশের তরকারিতে আলু একটি ‘কমন’ ব্যাপার। মিরাজ বাংলাদেশ দলে দিন দিনই হয়ে উঠছে তেমন কিছু।
যখন, যেখানে নামছেন; দরকার হচ্ছে বল হাতে, পারফর্ম করছেন দ্বিধাহীনভাবে। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচেই হাফ সেঞ্চুরি ছুয়েছিলেন। এবার রান পেলেন মূল পর্বের ম্যাচেও। রান নিতে মাঝ পথে গিয়ে আউট হয়ে লিটনের ’না’তে ফিরে আসতে হয় তানজিদ হাসানকে। পরে অবশ্য তানজিদও ড্রাইভ দেননি, জোরেও দৌড়াননি। ১৩ বলে ৫ রান করে ফিরতে হয় সাজঘরে।
আরও পড়ুন— ২ দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বদলীতে উলিপুরে মিষ্টি বিতরণ
এরপর লিটন দাস ফজল হক ফারুকির বলে ইনসাইড এজে হন বোল্ড। ১৮ বলে ১৩ রান করেন তিনি। পরের গল্পটা মিরাজের। তিনে ব্যাট করতে এসে দুর্দান্ত করেন তিনি। মাঝে একবার এলবিডব্লিউ আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলেও বেঁচে যান রিভিউ নিয়ে।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরির পর মিরাজ আউট হয়েছেন নাভিন উল হকের ওভারে রশিদ খানের লাফিয়ে উঠে নেওয়া দুর্দান্ত এক ক্যাচে। ৫ চারে ৭৩ বলে ৫৭ রান করেন তিনি। তার বদলে সাকিব এসে অবশ্য খুব বেশিক্ষণ টেকেননি। ১৯ বলে ২ চারে ১৪ রান করে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এরপর অবশ্য বিপদ ঘটেনি আর। মুশফিকুর রহিমকে সঙ্গে নিয়ে ম্যাচ শেষ করে আসেন শান্ত। ষষ্ঠ ফিফটি তুলে নিয়ে ৮৩ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৫৯ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।