বাবার রেখে যাওয়া দুই শতাংশ জমিতে তিন ভাই তাদের পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। আমার জমিও নাই- ঘরও নাই। আমি স্ত্রী ও দুই কলেজ পড়ুয়া ছেলে নিয়ে ভাড়া বাসায় বসবাস করছি। প্রতিদিন ২০০-৩০০ টাকা কাজ করি। সরকারি কোন অনুদান আসলে মেয়র রুবেল ভাট ও ইউসুফ কাউন্সিলর দেন। আমার একটা ঘর যদি প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি দিতেন খুব উপকার হতো।
‘বাপ-দাদারা জুতা সেলাই করতেন, তাদের পরে আমিও একই পেশায় কাজ করছি। এই পেশায় কাজ করে চার সদস্যের পরিবার এখন আর চলে না। মানুষের এখন টাকা হয়ে গেছে। কেউ ছেঁড়া জুতা সেলাই করে পায়ে দেয় না। দিবস ছাড়াও প্রতিদিন তিনি বসার আগে পুরাতন শহীদ মিনারটি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে থাকেন।
কথাগুলো বলছিলেন রায়পুর শহরের আলীয়া মাদরাসা সড়কের পুরাতন শহীদ মিনারের সামনে মুচি সম্প্রদায়ের চন্দন অদিবাস (৪৫)। ৩০ বছর ধরে জুতা সেলাই পেশায় রয়েছেন।।
লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় তার মতো এমন আরও ২০-৩০ জন আছেন, যারা ছেঁড়া জুতা সেলাই করে চলার উপযোগী করে দেন। বর্তমানে খেয়ে না খেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে কোনো রকম চলছে তাদের জীবন।
রায়পুর শহরের মুচি সম্প্রদায়ের কয়েকজন জানান, আমাদের মাঝে অনেকেই এখন এই পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। সারা দিন কাজ করে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়। এই টাকায় সংসার চালানো কঠিন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মুচি সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যারা ছোটবেলা থেকে মুচি হিসেবে কাজ করে আসছেন কিন্তু এখন অন্য কোনো কাজ করতে পারেন না, কেবল তারাই এই পেশা ধরে রেখেছেন। তবে তাদের বেশিরভাগই চান না সন্তানরা এই কাজ শিখুক। কারণ এই পেশায় কাজ করে সংসার চালানো বেশ কষ্টসাধ্য।
মুচি চন্দন অদিবাস বলেন, ৩০ বছর ধরে এই কাজ করে সংসার চালিয়েছি। কিন্তু এখন আর পারছি না। সারা দিন কাজ করে বাড়িতে যাওয়ার সময় চাল ডাল নিয়ে যেতে পারি না।
রায়পুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান খান বলেন, মুচি সম্প্রদায় একটি অবহেলিত সম্প্রদায়। পুরাতন জুতার মেরামত করেই চলে তাদের সংসার। আধুনিকতার যুগে তাদের পেশা এখন হারিয়ে যেতে বসেছে।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম সরকারি সাহায্য সহযোগিতা তারা সামাণ্য পান। তাদেরকে বলবেন আমার অফিসে এসে দেখা করতে। তাদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।