দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে হাঁস পালন করে স্বাবলম্বী সাবেক ইউপি সদস্য ময়নুল ইসলাম মন্টু। তিনি উপজেলার পালশা ইউনিয়নে নিজ বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গায় শুরু করেছেন এই হাঁস পালন। প্রথম দিকে অল্প পরিসরে শুরু করলেও এখন তার খামারে রয়েছে ৫ হাজার হাঁস। এতে তিনি ৩ মাসে আয় করছেন লাখ টাকার উপরে। এছাড়াও তার খামারে কাজ করে জিবিকা নির্বাহ করছেন ৪ জন যুবক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে তার পৃথক দুটি খামারে রয়েছে ৫ হাজার হাঁস। এসব হাঁস পাশ্ববর্তী সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থেকে ১৫ থেকে ২৫ টাকা দরে একদিনের হাঁসের বাচ্ছা তিনি কিনে নিয়ে আসেন। খামারে বাজার থেকে কেনা খাদ্য খাওয়ানোর পাশাপাশি বাড়ির পাশের ধানী জমি ও পুকুর-বিলে চড়ানো হচ্ছে এসব হাঁস।
প্রাকৃতিক খাবার খেয়েই বেড়ে উঠছে হাঁস গুলো। ফলে হাঁস পালনে খরচের পরিমান একতৃতীয়াংশ কমে গিয়েছে। বেড়েছে লাভের হার। গ্রামীন পরিবেশে টানা ৭০ দিন পালন করার পর এসব হাঁস বাজারজাত করার উপযোগী হয়। প্রত্যেকটি হাঁস ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে পাইকাররা কিনে নিয়ে যায়।
হাঁস পালনে ময়নুল ইসলামের সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই হাঁস পালন করতে শুরু করেছেন। উদ্যোক্তা হিসেবে তারাও উপার্জন করছে লাখ লাখ টাকা। অনেক পোল্ট্রি মুরগি পালনকারীও অধিক মুনাফার আশায় মুরগী পালন ছেড়ে মুরগীর শেডে হাঁস পালন শুরু করেছেন। খামারী ময়নুল ইসলাম মন্টু বলেন, আমি মেম্বার পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর চিন্তা করলাম বসে না থেকে কিছু একটা করি। তখন আমার হাঁস পালনের চিন্তা মাথায় এলো তখন আমি অল্প পরিসরে হাস পালন শুরু করি। এখন আলহামদুল্লিাহ্ আমার খামারে ৫ হাজার হাঁস রয়েছে। অল্প সময়েই সফলতা অর্জন করেছি।
আমার ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেছে। আশা করছি আগামী দিনে এরচেয়ে আরো বড় পরিসরে আমি হাঁস পালন করব। মন্টু মেম্বারকে দেখে অনুপ্রাণিত হওয়া আরেক খামারী বলেন, আমার একটি বয়লার মুরগরী খামার রয়েছে। তাতে আগে আমি বয়লার মুরগি পালন করতাম। তাতে আমি দুইবার মোটা অঙ্কের লোকসানে পড়েছি। তবে এবার মন্টু ভাইয়ের দেখে হাঁস পালন করেছিলাম এতে আমি লাভবান হয়েছি। তাই আমি শিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এখন থেকে হাঁস পালনই করবো।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ বিল্পব কুমার দে বলেন, অন্যান্য পশু-পাখি পালনের চেয়ে বর্তমান সময়ে হাঁস পালন করে অধিক মূনাফা পাওয়া সম্ভব। প্রতিনিয়ত তরুন-যুবকরা হাঁস পালনের দিকে ঝুঁকছে। আমরা খামারীদেরকে বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন প্রদান সহ সব ধরণের পরামর্শ ও সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছি। ঘোড়াঘাট উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে মোট ৬১টি হাঁসের খামার আছে। এসব খামারে প্রায় লক্ষাধিক হাঁসের পালন হচ্ছে।