লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগের বাহিয়ে (টিউবওয়েলের সামনে) সন্তান প্রসব করেছেন এক গৃহবধূ। শনিবার (৭ জানুয়ারী) সন্ধায় কনকনে শীতের মধ্যে তিনি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন বলে কয়েক প্রত্যক্ষদর্শী, ওই গৃহবধুর বোন ও হাসপাতালের নার্সরা জানান।
আমেনা বেগম বেগম (৩৬) নামে ওই গৃহবধূ উপজেলার চরবংশী ইউপির চরকাছিয়া গ্রামের দিনমজুর লাল মিয়ার স্ত্রী।
ঘটনা জানাজানি হলে চার ঘন্টার মধ্যেই হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার বাহারল আলম জরুরী ভিত্তিতে গৃহবধুর বোন, গৃহকর্তা প্রভাষক নুরনবি ও সাংবাদিকের উপস্থিতিতে ওই নার্সকে এঘটনার জন্য বৎসনা করেন। দ্রুত অসুস্থ্য আমেনা বেগম ও তার অসুস্থ্য শিশুকে হাসপাতালে এনে ভর্তিকরে শিশু ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করান।
বর্তমানে আমেনা বেগম রায়পুর সরকারি হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।
আমেনা বেগম ও তার শিশু সন্তান সুস্থ রয়েছে বলে জানান গাইনি ওয়ার্ডের কর্তব্যরত নার্স আরজু বেগম।
আমেনার বড় বোন ফিরোজা বেগম জানান, অসুস্থ্য আমেনাকে দুপুর ২টার সময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এসে ডাক্তার দেখার পর ভর্তি করেন। নার্স আরজু বেসরকারি দুটি হাসপাতালে আলট্রা পরীক্ষা করান। বাচ্চার ওজন কম ও পানিও কম এবং আইসিইউ নাই এই বলে বিকালে জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরন করে। কিন্তু আমরা গরিব মানুষ ও অন্যের বাসায় কাজ করে সংসার চলে। টাকার কারনে অন্য হাসপাতালে না গিয়ে এই হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসার করার জন্য কয়েকবার নার্সকে অনুরোধ করি। কিন্তু নার্স আমাদের কথা না শুনেই অন্য হাসপাতালে পাঠান।
সন্ধায় কান্নাকাটি করে অসুস্থ্য আমেনাকে নিয়ে সদর হাসপাতালে রওয়ানা দিলে হাসপাতালের সামনে টিউবওয়েলের কাছে আসার পর প্রসব বেদনা উঠে। এ সময় সেখানেই তিনি সন্তান জন্ম দেয়। বর্তমানে প্রসূতি ও নবজাতক সুস্থ রয়েছে।
জরুরি বিভাগের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্য সজিব জানান, গৃহবধূকে কাঁদে ভর করে নিয়ে আসা হয়। তাকে জরুরি বিভাগে স্বজনরা ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। এ সময় ওই নারী হাসপাতাল থেকে বের হয়ে টিউবওয়েলের সামনে পৌঁছার পরই প্রসব ব্যথায় চিৎকার করতে থাকেন। তখন স্থানটি চাদরে ঘিরে সন্তান প্রসব করা হয়।
চিকিৎসাধীন গৃহবধূ আমেনা জানান, এটি তার প্রথম সন্তান। জরুরি বিভাগে ভর্তির সময় প্রসব ব্যথা উঠে। নার্স বলাতেই অন্য হাসপাতালে যাওয়ার পথে টিউবওয়েলের সামনে সন্তানের জন্ম হয়। তখন দুইজন মহিলা এসে সহায়তা করেছেন।
রায়পুর স্বাস্থ্য ও পরিবার পটিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার বাহারুল আলম বলেন, ঘটনাটি আমি জানতাম না। তবে দুঃখজনক। আগামিতে এধরন এর ঘটনা যেন না হয়, সবাইকে সতর্ক করা হয়।