লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের উত্তর চরবংশির ইউপিত অন্তত ৮ গ্রামের মানুষকে ব্যবহার করতে হয় সেতুটি। গ্রামগুলো থেকে উপজেলা সদর কিংবা জেলা সদরে যেতে অপরিহার্য সেতুটির ২ পাশে আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাজার। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় সেতুটি চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে গেছে। একই পরিস্থিতি চরআবাবিল ইউপির হায়দরগঞ্জের এমপির বাজারে নদীর উপর সেতুটিও। যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
উপজেলার উত্তর চরবংশি ইউনিয়নের মেঘনার বেরিবাঁধের পাশে ডাকাতিয়া নদীর উপর এ সেতুটি মালেকখাঁর সেতু হিসেবে পরিচিত। ৯০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬ ফুট প্রস্থের সেতুটি ১৯৯৮ সালে নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। ইট-সিমেন্ট দিয়ে করা ৮টি পিলারের উপর সেতুটি তৈরি করা হয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে পিলারে মরিচা পড়েছে। রেলিং ভেঙে গেছে। সেতুর মাঝামাঝি জায়গায় ৩টি বড় বড় গর্তের সৃস্টি অবস্থায় হয়েছে। এর মধ্যে জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে সেতুর আশেপাশের গ্রামগুলোর হাজার- হাজার মানুষকে প্রতিদিন প্রাত্যহিক কাজে পার হতে হয় সেতুটি। এই সেতু দিয়ে, অটো, ইজিবাইক, বাইসাইকেল ও মোটরসাইকেল চলাচল করছে। রিক্সা বা ভ্যানে যাত্রীরা ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পার হয়। তিনজন শিশু গর্ত দিয়ে পানিতে পড়ে যায় বলেও জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বেরিবাঁধের দুই পাশে বসবাসকারি, চরকাছিয়া, চরইন্দ্রুরিয়া, খাসেরহাট ও চরবংশি এলাকার বাসিন্দাদের এই সেতু দিয়েই চরবংশি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয় ও খাসেরহাট বাজার এলাকায় যেতে হয়।
চমকাবাজার গ্রামের বাসিন্দা ভ্যান চালক চলেমান মাঝি (২২) বলেন, ‘এই সেতু দিয়ে ভ্যান নিয়া আসলে বিপদে পড়তে হয়। যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার পরও পেছন থেকে না ঠেললে টেনে নিয়ে যাওয়া যায় না।’ চরজালিয়া গ্রামের বাসিন্দা মালেক সোবাহান (২৪) বলেন, ‘গত এক বছর ধরে সেতুর এই অবস্থা। ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বার বার গিয়েও কোনো কাজ হয়নি।’
জানতে চাইলে উত্তর চরবংশি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, ‘আমিও এই সেতু দিয়েই মাঝে মাঝে চলাচল করি। এটা তো। আমি নিজেই তো এর ভুক্তভোগী।’স্থানীয় সরকার বিভাগ নতুন করে এ সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান তিনি।
যোগাযোগ করা হলে রায়পুর উপজেলা প্রকৌশলী মোস্তফা মিনহাজ বলেন, ‘চরবংশি ইউপির পুরোনো এই সেতুটি মেরামত করে দেয়া হবে। এছাড়াও চরআবাবিল ইউপির হায়দরগঞ্জের এমপির বাজার নদীর উপরে সেতুটিও নির্মান করে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে সেতুর নকশা করা হয়েছে।’ নতুন সেতু দুটির নকশাও এলজিইডি ঢাকার প্রকল্প পরিচালকের দপ্তরে পাঠানো হয়। অনুমোদন পাওয়াগেলে দরপত্র আহ্বান করে কাজ শুরু হবে।