লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে এনজিও থেকে নেওয়া ঋণের কিস্তির টাকার চাপে মো. হারুনুর রশিদ (৪২) নামে এক ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন।
সোমবার (১০ জুন) সকাল ১০টায় উপজেলার চরলরেন্স ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কোম্পানির রাস্তার মাথায় নিজের চা দোকান থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত হারুন ওই এলাকার মৃত আমিন উল্লাহর ছেলে এবং তিনি তিন মেয়ে, দুই ছেলের জনক।
পরিবারের লোকজন জানান, হারুন চারটি এনজিও (প্রিজন বাংলাদেশ, ব্রাক ব্যাংক, উত্তরণ ও আশা) থেকে বিভিন্ন মেয়াদে প্রায় চার লাখ টাকা ঋণ নিয়েছন। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে ধার-দেনায় ছিলেন তিনি। কিস্তির টাকা নিয়ে মেয়ের বিয়ে ও দোকানের কাজে লাগিয়েছেন।
আজ সোমবার (১০ জুন) সকাল ১০টায় কিস্তির টাকার পরিশোধের তারিখ ছিল তার।
কিন্তু টাকা পরিশোধের মতো অবস্থান ছিল না তার। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন তিনি। সকাল ১০টায় দোকানের ভেতরেই তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা।
ঋণের চাপে তিনি আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন পরিবার ও স্থানীয় লোকজন।
হারুনের স্ত্রী বিবি কুলছুম জানান, চারটি সংস্থা থেকে ঋণের বিপরীতে প্রতি মাসে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা কিস্তি পরিশোধ করতে হয়। দোকানের স্বল্প আয়ে কয়েক মাস কষ্ট করে কিস্তির টাকা পরিশোধ করলেও চলতি মাসে পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। এ মাসে কিস্তির টাকা পরিশোধের কয়েকটি তারিখ পার হয়ে গেলেও টাকা জোগাড় করতে পারেননি তার স্বামী। এতে এনজিও কর্মীরা চাপ দিচ্ছিলেন। তাদের চাপ ও লোকলজ্জার ভয়ে নিজ দোকানের ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি লাগিয়ে তার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন।
তিনি কেঁদে কেঁদে জানান, আমার সব শেষ হয়ে গেছে। এসব ঋণ কিভাবে পরিশোধ করব? আমাদের দুইজন নাবালক ছেলে সন্তানদের কিভাবে মানুষ করব ?
কমলনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তহিদুল ইসলাম জানান, হারুনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।