লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পৌরসভার নতুনবাজারের পানহাটা, উত্তর রায়পুর ও চরবংশী এলাকাসহ বিভিন্নস্থানে পাগলা কুকুরের আক্রমণ ও কামড়ে ১২ জন গুরুতর আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৯ জন শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। আহত নারী ও শিশুরা রায়পুর সরকারি হাসপাতালে জলাতঙ্কের ভ্যাকশিন না পেয়ে হতাশ হয়ে জেলা সদর হাসপাতালে ছুটে গেছেন।
একই দিনে এত মানুষকে কুকুরে কামড়ানোর ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ ছাড়া গত চার মাস হাসপাতালে সরবরাহ না থাকায় কুকুরের কামড়ে আহত রোগীদের বাইরে থেকে ভ্যাকসিন কিনতে হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
আহতদের মধ্যে রায়পুর শহরের নতুনবাজারের পানহাটা, উত্তর রায়পুর ও চরবংশী এলাকায় একটি পাগলা কুকুরের কামড়েই শিশু, তরুণ, যুবক ও বয়স্ক আট ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছে। বাকিরা উপজেলার কেরোয়া, বামনী, হায়দরগন্জ ও পৌরসভার দেনায়েতপুর এলাকায় কুকুরের আক্রমণের শিকার হয়েছে।
আহতদের কারো পায়ে, ঊরুতে, হাতে, পেটে, মুখে, আঙুলে, গলায়সহ বিভিন্ন স্থানে কামড় দেয় কুকুর। কুকুরের আক্রমণ ও কামড়ে আহতরা সবাই রায়পুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়েও বিড়ম্বনার শিকার হয়েছে। কুকুরের কামড়ে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধের কোন ভ্যাকসিনের সরবরাহ নেই জন মাস থেকে ধরে। র্যাভিক্স ভিসি নামের সেই ভ্যাকসিনটি বাইরে থেকে কিনতে লাগে প্রতি ভায়াল ৫০০ টাকা করে। অন্য ভ্যাকসিনটি হলো ইম্যুনোগ্লোবিওলিন। এটি দামি ভ্যাকসিন। প্রতিটি ভায়ালের দাম এক হাজার ৫০ টাকা।
আরও পড়ুন— সিলেটে হত্যা ও মাদক মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
ফলে বৃহস্পতিবার কুকুরের কামড়ে আহতদের প্রত্যেককেই একটি ভ্যাকসিন বাইরে কিনে ও অন্যটি সদর হাসপাতালে নিয়ে দেয়া হয়।।
কুকুরের কামড়ে গুরুতর আহত চরবংশী এলাকার ফাতেমা খাতুন জানান, তিনি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দুই সন্তানকে নিয়ে নতুন বাজারের পানহাটা দিয়ে থেকে বাসায় ফিরছিলেন।
এ সময় রাস্তায় থাকা একটি কুকুর তার ওপর আক্রমণ করে। কুকুরটি তার এক পায়ে এবং বড় মেয়ের কোমড়ের পিছনে কামড় দিলে রক্তাক্ত হয়। স্থানীয়রা কুকুরটিকে তাড়া করলে আরো কয়েকজনকে কামড়ায়। কুকুরটি তাড়া খেয়ে কাছেই পশ্চিম মহিলা কলেজের দিকে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা দল বেঁধে লাঠিসোঁটা দিয়ে দৌড়ানি দিলে কুকুরটি পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী খালেক মাল অভিযোগ করে বলেন, ‘কুকুরের কামড়ে আহত হওয়ার পর রায়পুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাই। হাসপাতাল থেকে ইনজেকশন না পেয়ে একটা ইনজেকশন ৫২০ টাকা দিয়ে বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে। অন্যটির জন্য সদর হাসপাতালে চলে আসছি। শুধু আমি না, সবাই ইনজেকশন বাইরে থেকে কিনতে হয় ও সদরে হাসপাতালে আসছে।’
রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ বাহারুল আলম কুকুরের কামড়ে আহতদের চিকিৎসা প্রসঙ্গে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার পর থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অন্তত ৭ রোগী জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য আসে। গত চার মাস কোন ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকার ফলে রোগীরাই বাইরে থেকে কিনেছেন। হতে সবাইকে টানা কয়েক দিনের চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কেউ গুরুতর অসুস্থ বোধ করলে তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’