লক্ষ্মীপুর বিদুৎ উন্নয়ন বোর্ড’র (পিডিবি) নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামিম ফরহাদ এর দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে এর আগে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় ক্ষোভ প্রকাশের পর এবার জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলার নিরীহ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের পক্ষ থেকে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ হোসাইন আহমেদ হেলাল স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পত্র ডিসি কাছে জমা দেওয়া হয়।
এতে নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামিম ফরহাদ এর বিস্তর দুর্নীতি ও অনিয়মের ফিরিস্তি তুলে ধরা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নতুন বিদ্যুৎ সংযোগের দরখাস্ত করলেই নানান অজুহাতে গ্রাহককে হয়রানি করা হয় এবং তার দাবীকৃত অর্থ প্রদান করলে ওই গ্রাহককে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয় আর না হলে দিনের পর দিন বিদ্যুৎ অফিস ঘুরেও বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া দায় হয়ে দাড়ায় গ্রাহকদের। সরকারি ভাবে বিনামূল্যে ৮শ’ ডিজিটাল মিটার দেওয়া হয়। অথচ নির্বাহী প্রকৌশল ইতিমধ্যে ৫শ’ মিটার প্রতিটি ৩ হাজার টাকা করে নিয়ে বিতরণ করেন। যা সরকারি দপ্তরগুলোতে বিনামূল্যে দেওয়ার কথা।
আরও পড়ুন- পিডিবির প্রকৌশলীর দুর্নীতিঃ আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে ক্ষোভ প্রকাশ (পর্ব-১)
অভিযোগ হতে আরও জানা যায়, লক্ষ্মীপুর পুলিশ লাইন এর অফিসার্স মেস এর ভবন নির্মাণ কার্যক্রম শেষ হওয়ার একবছর পরও বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হচ্ছে না। লক্ষ্মীপুর গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদারের কাছে সংযোগ দিতে ৫ লক্ষ টাকা দাবী করায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হলেও ৫ লক্ষ টাকার জন্য সংযোগ দেয়া হচ্ছে না। লক্ষ্মীপুর তন্ত্ববায় সমিতির কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা নিয়ে (১৯ টি) মিটার সংযোগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সাধারণ গ্রাহকদের মিটার স্থানান্তরের সরকারি নিয়ম থাকলেও নির্বাহী প্রকৌশল তা না করে, পূর্বের মিটার হস্তান্তর দেখিয়ে নতুন মিটারে ১০ হাজার টাকা করে নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, নির্বাহী প্রকৌশল নিজের গাড়ি মেরামতের নামে প্রতি মাসে অনেক টাকা ব্যায় দেখালেও জরুরি সেবার গাড়ি মেরামত করা হচ্ছে না। পাঁচতলা ভবনের উপরে কোন স্থাপনাতে সংযোগ দিতে ২ লক্ষ টাকা দিতে হয় নির্বাহী প্রকৌশলীকে এমন অভিযোগও অহরহ। মিটারের কিলো বাড়াতে সরকারি খরচ হয় ১১৫ টাকা, অথচ নির্বাহী প্রকৌশলী ৬১৫ টাকা নিচ্ছে। বিদ্যুতের পিলার প্রতি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা করে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। পাটোয়ারী জামে মসজিদে সংযোগ দিতে ২০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে। এসটিপি ৭৯ কিলো নির্ধারণ করা থাকলেও গ্রাহকদের ৩০/৩৫ কিলো বেশি হলে প্রচুর টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। দালাল বাজার খোয়া সাঘর দিঘীর পাড়ে ট্রাক দুর্ঘটনায় একটি পিলার ভেঙে পড়লে ট্রাক মালিক থেকে ৪০ হাজার টাকা আদায় করে সরকারি কোষাগারে নাম মাত্র টাকা জমা দেয় এই নির্বাহী প্রকৌশলী। এছাড়াও গ্রাহকদের সাথে সার্বক্ষণিক দুর্ব্যাবহার করে বলে এ অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন- খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন
লক্ষ্মীপুর জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মোঃ ইউনুস মিয়া বলেন, ‘আমার নতুন কার্যালয়ের জন্য ১০ কিলো একটি মিটারের আবেদন করি। কিন্তু নির্বাহী প্রকৌশল আমাকে নানা ভাবে গড়িমসি করে। একপর্যায়ে সচিব মহোদয়কে জানালে ওই কার্যালয়ে সংযোগ দেয়।’
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর বিদুৎ উন্নয়ন বোর্ড’র (পিডিবি) নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামিম ফরহাদ বলেন, ‘আমার নামে অনেকেই টাকা আদায় করে শুনেছি। কিন্তু আমার কাছে কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি।’
