শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ডিআইটি মাঠে শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান বলেছেন, বড় ধরনের ঘটনা ঘটবে। আমার মতো কিছু শামীম ওসমানের মরদেহ দাফন হবে হয়ত, তবে ২০২৪ সালে শেখ হাসিনাই প্রধানমন্ত্রী হবেন। এতটুকু খবর রেখে রাজনীতি করি। শরীরে রক্ত টগবগ করে, লেভেল ক্রস করবেন না। বেশি বাড়াবাড়ি কইরেন না, মা বলার সুযোগও পাবেন না।
আলোচনা সভায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে শামীম ওসমান বলেন, সবাই জানেন, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানি এবং তার কথা শুনি। এ জন্য নারায়ণগঞ্জকে ঠান্ডা রাখি। তবে এবার কিন্তু প্রয়োজনে উনার কথা শুনব না। যে ভাষায় তুমি খেলবা, আমরা সে ভাষায় খেলব এবং জিতব। যত ইচ্ছা খেলো। শয়তান কখনো আল্লাহর সঙ্গে জিতে না। সে শুধু শয়তানি করতে পারে।
শেখ হাসিনার ওপর আল্লাহর রহমত আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, লন্ডনে বসে পরামর্শ দেন। কিন্তু মায়ের মরা মরা অবস্থা, তার কাছে আসেন না আপনি। আপনার স্ত্রী একজন ভালো চিকিৎসক, তাকে পাঠাতেন দেশে। আপনার মেয়েও তার দাদির পাশে আসতে পারত, আসে নাই। দাদির নাম বেচেইতো লন্ডনে মজ-মাস্তিতে আছেন। যিনি তার অসুস্থ মায়ের পাশে দাঁড়াতে পারে না, তিনি দেশের জন্য কী করবেন? ম্যাডাম খালেদা জিয়ার জন্য আমার কষ্ট লাগে।
তিনি আরও বলেন, রাজপথ আওয়ামী লীগের দখলে থাকবে, শেখ হাসিনার দখলেই থাকবে। আমাদের শরীরের রক্ত টগবগ করে। যারা যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে, তাদের দায়িত্ব শেষ। শেখ হাসিনা শুধু আওয়ামী লীগের সম্পদ না, তিনি আগামী দিনের বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ। তাকে আঘাত করলে এ দেশ এমন জায়গায় যাবে যেখান থেকে আমরা আদৌ উঠে আসতে পারব কি না জানি না। এ সংকটে তারা আঘাত করবে। ক্ষমতায় আসা তাদের মূল টার্গেট না। বাংলাদেশকে তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়।
লন্ডনে বসে বসে স্কাইপে অর্ডার দিবেন নেতা-কর্মীর ওপর হামলা চালাতে, এখানে মার, ওখানে মার। মানুষের ছেলেগুলোকে বিপদে ফেলবেন। বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থা এখন অনেক স্মার্ট, কোথায় বাতাসে ফুলের টোকা পড়ে, সেই খবরও গোয়েন্দা সংস্থা রাখে। আমরাও কিছু খবর রাখি, যা ভাবতাসেন তা পারবেন না। হয়ত কিছুটা করতে পারবেন, যাদের সাহায্য নিয়া কিছু একটা করতে চাচ্ছেন, একটা সময় দেখবেন তারা পেছনে নাই।
নিজ দলের নেতাদের মেরে সরকার দলের ওপর দায় চাপানোর নোংরা খেলা হবে উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, সবাই চোখ-কান খোলা রাখবেন। নাশকতা হবে, শহরে অনেক কালো টাকা ঢুকেছে। বিএনপির মাঝারি সারির নেতাদের মেরে ফেলা হতে পারে। তাদের মেরে আমাদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা হতে পারে। কয়েকদিন আগে অধ্যাপক মামুনের (জেলা বিএনপির সদস্য সচিব) ওপর হামলা করা হয়েছে। একটুর জন্য বেঁচে গেছেন। এ এলাকার একজন লোক যার হাতে আমাদের বহু লোক মারা গেছে, তার ছেলের নাম এসেছে। এই খেলা নারায়ণগঞ্জে নতুন না। ত্বকী হত্যার পরেও খেলেসে, সাত খুনের সময় খেলেসে। যদি মামুন মাহমুদ মারা যেতেন তবে এই খেলা হতো। একটা ইস্যু সৃষ্টি করার জন্য লাশ তাদের খুব দরকার।
আগামী ২৭ আগস্টের সমাবেশে যোগদানের আহ্বান শামীম ওসমান আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমার বাবাকে রিলিফের কাপড় দিয়ে জানাজা দেওয়া হয়েছে। আমি মরে গেলেও কিছু আশা করি না। নারায়ণগঞ্জ তাকে দেখাতে চায়, আপনাকে মারা তো দূরের কথা, আপনাকে আঘাত করা হলেও নারায়ণগঞ্জের মানুষ বসে থাকবে না। সেই উদ্দেশ্যে ২৭ আগস্ট জনসভা করব। সবাই আসবেন, মনে রাখবেন এটা অস্তিত্বের লড়াই।
ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদলের সভাপতিত্বে শোক দিবসের আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম প্রমূখ।