‘ভারতে গিয়ে বলেছি শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের এমন বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আরেক মন্ত্রী ও দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘আমরা কীভাবে এ কথা বলি? এতে করে ভারতও লজ্জা পায়।’
শুক্রবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর পলাশীতে জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন কাদের।
এক সপ্তাহ আগেও বাংলাদেশের মানুষ বেহেশতে আছে বলে বক্তব্য দিয়ে দেশব্যাপী কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই আবারও বিতর্কিত বক্তব্য মোমেনের মুখে। এবার বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম শহরের জে এম সেন হলে জন্মাষ্টমী উৎসবের অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, আমি ভারতবর্ষের সরকারকে সেটা অনুরোধ করেছি।’
তিনি বলেন, যিনি এ কথা বলেছেন, এটা তার ব্যক্তিগত অভিমত হতে পারে। এটা আমাদের সরকারেরও বক্তব্য নয়, দলেরও নয়।
আরও পড়ুন: মিডিয়াকে ‘সহনশীল’ হওয়ার অনুরোধ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
মোমেনের এমন বক্তব্যের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘ভারত আমাদের সুসময়ের বন্ধু। একাত্তরের রক্তের বন্ধনে আমরা আবদ্ধ। কিন্তু তাই বলে আমরা ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ভারতকে অনুরোধ করব, এ ধরনের কোনো অনুরোধ আওয়ামী লীগ করে না, করেনি, শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষ থেকেও কাউকে দায়িত্ব দেয়া হয়নি।’
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর একের পর এক বিতর্কিত বক্তব্যে বিব্রত আওয়ামী লীগের নেতারা। শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে ভারতকে অনুরোধ জানানোর বিষয়ে যে বক্তব্য মন্ত্রী দিয়েছেন তার কোনো ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এছাড়া তার অসংবেদনশীল বক্তব্যে বিব্রত দল।
আরও পড়ুন: ভারতকে বলেছি হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে কেবল সরকার বা আওয়ামী লীগই বিব্রত না, বাংলাদেশের কোটি কোটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষ আজ বিব্রত। তিনি তার বক্তব্যে তালগোল পাকিয়ে ফেলছেন। আমি মনে করি তার বক্তব্য দেয়ার ক্ষেত্রে, কথা বলার ক্ষেত্রে সরকারের একটা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত।
সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু, কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু তাই বলে তারা আমাদের ক্ষমতায় রাখবে বা ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করবে এমনটি ভাবা বা চিন্তা না করাই ভালো। যদি কেউ এ ধরনের কথা বলে থাকে, তাহলে আমি মনে করি সে দায়িত্বশীল কথা বলেনি।