যুক্তরাষ্ট্রের ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মন্তব্য করে বলেছেন- বিশ্বজুড়ে যখন জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল, তখন যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শেই র্যাব সৃষ্টি করা হয়েছিল। এসময় তিনি বলেন, ‘হঠাৎ এই বাহিনীটির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বোধগম্য নয়।’ র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় জঙ্গিরা এখন উৎসাহিত হয়েছে বলেও মনে করেন বলে জানান তিনি।
ভয়েস অব আমেরিকাকে গত ২৯ এপ্রিল দেওয়া সাক্ষাৎকারটি সোমবার (১ মে) প্রকাশ হয়েছে। সাক্ষাৎকারে র্যাবের সংস্কারে বাংলাদেশ সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, এমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পরামর্শেই র্যাব সৃষ্টি। তাদের ট্রেনিংসহ সবকিছুই আমেরিকার করা। কিন্তু কেন র্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো, তা প্রশ্নবিদ্ধ। বাহিনীতে কেউ কোনও ধরনের অপরাধ করলে তাদের সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় নিয়ে আসায় হয়, যা অন্য দেশে নেই। এমনকি আমেরিকাতেও নেই। তারপরও এ ধরনের ঘোষণা দুঃখজনক।’
আরও পড়ুন- চৌহালীতে মহান মে দিবস পালিত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের এক প্রতিমন্ত্রীর মেয়ের স্বামী, সে একটা অপরাধ করেছে, সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেফতার ও জেলে দেওয়া হয়। সে শাস্তি পেয়েছে। আমরা কিন্তু এভাবেই দেখি।’
র্যাবের সংস্কার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে র্যাবের ভালো ভূমিকা আছে। র্যাবের যেকোনও কর্মকর্তা অপরাধ করুক না কেন, শাস্তির আওতায় আনা হয়। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় আমরা সবসময় সচেতন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকার আসার পর থেকে আরও বেশি।’
সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কাদের সঙ্গে ডায়ালগ (আলোচনা) করব আমি? একে তো সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তারপর আবার আমার বাবা-মা, ভাই-বোনদের খুনি, যুদ্ধাপরাধী। তারপরও দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য অনেক উদারতা দেখিয়েছি। তবে এখন আর তাদের (বিএনপি) সাথে কথা বলার মতো কিছু নেই। কারণ তাদের যে অপরাধ, আমার ২১ হাজার নেতাকর্মীকে তারা হত্যা করেছে।
আরও পড়ুন- রোকাইয়াকে বাঁচাতে প্রয়োজন ৪ লাখ টাকা
তিনি বলেন, আমরা কিন্তু বার বার বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করেছি, ২০১৮ এর নির্বাচনেও। আসলে বিএনপি এমন একটা রাজনৈতিক দল, এই দলটা সৃষ্টি করেছে একজন মিলিটারি ডিক্টেটর, যে ১৯৭৫ সালে আমার বাবা-মা-ভাই-বোনদের হত্যা করে একজন রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে।
‘এবং ক্ষমতায় আসার আগে সে কিন্তু যখন আমার বাবাকে হত্যা করা হলো, তারপর যিনি ক্ষমতায়- তাকে সরাল, তারপরে আরেকজন চিফ জাস্টিস সায়েম-তাকে সরিয়ে অস্ত্র হাতে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসে। তারপর সে একটা রাজনৈতিক দল করে। একজন সেনাপ্রধান নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে চেয়ারে বসল, তারপর হ্যাঁ/না ভোটের নামে নাটক করা হলো। সেখানে না ভোট না, হ্যাঁ ভোটই হয়ে গেল।… এ কথা সবাইকে মনে রাখতে হবে যে, অস্ত্র হাতে নিয়ে ক্ষমতা দখল করে, ক্ষমতায় বসে থেকে যে রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করেছে, সেটাই হচ্ছে বিএনপি।’
সাক্ষাৎকারটি দেখতে ক্লিক করুন এখানে।