লক্ষ্মীপুরের রামগতির চরগাজীতে একটি হরিণ জবাই করা হয়েছে। চরগাজী ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. ফরিদ উদ্দিনের নেতৃত্বে হরিণটি জবাই করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী। পরে হরিণের মাংস ভাগবাটোয়ারা করে নেয় ফরিদসহ স্থানীয় কয়েকজন।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে রামগতির থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন মুঠোফোনে হরিণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর-আগে দুপুরে চরগাজীর বয়ারচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে হরিণ জবাইয়ের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় রামগতির তেগাছিয়া পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা। তারা প্রথমে হরিণের মাংস জব্দ করলেও পরে রহস্যজনক কারনে সেগুলো রেখে দেয়।
স্থানীয় লোকজন জানায়, হাতিয়ার একটি দুর্গম চর থেকে বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) রাতে রামগতির বয়ারচরে একটি হরিণ নিয়ে আসা হয়। সেটি ইউপি সদস্য ফরিদের বাড়িতে রাখা হলে সকালে হরিণটি ছুটে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। পরে বয়ারচরের মীর বাজার এলাকা থেকে হরিণটিকে ধরা হয়। সকালে সেটিকে সিরাজ মাঝির বাড়িতে নিয়ে জবাই করা হয়। ইউপি সদস্য ফরিদ ও তার সহযোগী মুকিত মাঝি, আকবরসহ কয়েকজন মিলে হরিণটি জবাই করে দেন। খবর পেয়ে স্থানীয় তেগাছিয়া পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হরিণের মাংসগুলো উদ্ধার করলেও পরে রহস্যজনক কারণে সেখানে রেখে চলে আসে।
এ বিষয়ে তেগাছিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ নির্মলের সাথে সাংবাদিক পরিচয়ে মোবাইল ফোনে হরিণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। পরবর্তীতে পুনরায় ফোন দিলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে এ প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আপনি যে সাংবাদিক, আমি কিভাবে বুঝবো?’ ক্যাম্পে আসেন, তখন কথা হবে- বলে লাইন কেটে দেন।
ওসি আলমগীর জানান, যতোটুকু খবর নিয়ে জানতে পারলাম একটি হরিণ নদীতে ভেসে আসলে স্থানীয়রা ধরে জবাই করে ভাগবাটোয়ারা করে নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে কাউকে পায়নি। তবুও বিষয়টি পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
চরগাজী ইউপি সদস্য ফরিদ হরিণ জবাই করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, হাতিয়ার ভূঁইয়ারহাট এলাকার আলাউদ্দিন নামে এক ব্যক্তির কয়েকটি হরিণ লালনপালন করছে। তার খামার থেকে একটি হরিণ পালিয়ে এসে রামগতির বয়ারচর এলাকায় আসে। সেটিকে কুকুরে কামড় দিলে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় কয়েকজন লোক হরিণটিকে জবাই করে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম শান্তুনু চৌধুরীর কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
লক্ষ্মীপুর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. ফিরোজ আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি, হরিণ জবাই করা অপরাধ। পুলিশ যেহেতু ঘটনাস্থলে গেছে, তারা চাইলে মাংসগুলো জব্দ করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারতো। এ বিষয়ে আমি খোঁজ খরব নিচ্ছি।