আসন্ন আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে ভোটগ্রহণ না করে ৩০০ আসনেই স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপারেই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সোমবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে সকাল সাড়ে ১০টায় কমিশনের ১৭তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
দেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১৫০ আসনে ব্যবহারের জন্য প্রায় ২ লাখ ইভিএম কিনতে একটি প্রকল্পের প্রস্তাব গত ১৯ অক্টোবর পরিকল্পনা কমিশনের কাছে পাঠায় নির্বাচন কমিশন। সে প্রকল্পের আকার ধরা হয় ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। কিন্তু বাজেট স্বল্পতার কারণে প্রকল্পটি পরে পরিকল্পনা কমিশন প্রত্যাখ্যান করে। বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের কাছে যে পরিমাণ ইভিএম আছে, তা মাত্র ৭০ থেকে ৭৫টি আসনে ব্যবহার করা যাবে।
আরও পড়ুন- রোকাইয়াকে বাঁচাতে প্রয়োজন ৪ লাখ টাকা
কমিশন ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার কারণ জানতে চাইলে সচিব জানান, ইভিএম কেনার জন্য প্রকল্পের টাকা না পাওয়া; পরবর্তীতে নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকা ইভিএমগুলো সারানোর জন্য যে ১২০০ কোটি টাকার দরকার ছিল সেটি দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনাগ্রহ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধীতার কারণে ইভিএমের সিদ্ধান্ত থেকে কমিশন সরে এসেছে।
এর আগে ৬ সেপ্টেম্বর, ৩৯ বিশিষ্ট নাগরিক নির্বাচন কমিশনকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসার আহ্বান জানান। চলমান অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে ইভিএম আমদানিতে এই বড় অংকের ব্যয়ের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তারা। বিএনপিও নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিরুদ্ধে রয়েছে।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীপুরে শ্রমিকলীগ কমিটি নিয়ে বিভ্রান্তি
অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের বিরোধিতার পরও নির্বাচন কমিশন তাদের রোডম্যাপে আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সর্বোচ্চ দেড়শ’ আসনে ইভিএমে ভোট করার ঘোষণা দেয় আগেই। আর সেই জন্য ইভিএম কিনতে শুরুতে প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ চায় ইসি। কিন্তু পরিকল্পনা কমিশন সেই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। এরপর ইসির কাছে থাকা ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম মেরামতের জন্য প্রায় তেরশ’ কোটি টাকা চেয়ে চিঠি দিলেও অর্থ মন্ত্রণালয় সেই প্রস্তাবও ফিরিয়ে দেয়। সোমবার নির্বাচন কমিশনের ১৭তম কমিশন সভায় এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। সভায় অন্য চার কমিশনারসহ ইসি সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।