লক্ষ্মীপুর জেলা শ্রমিক লীগের কমিটি নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুর কুতুব আলম মান্নান শনিবার (১ এপ্রিল) রাতে জেলার নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। এতে আফতাব উদ্দিন বিপ্লবকে আহ্বায়ক করে ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। বিপ্লব সদ্য প্রয়াত লক্ষ্মীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু তাহেরের ছেলে।
তবে রবিবার (২ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক কে এম আযম খসরু এক চিঠিতে বিপ্লবকে আহ্বায়ক করে ঘোষিত কমিটি বাতিল করেন। চিঠিতে আগের জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইউছুফ পাটওয়ারী ও সদস্য সচিব বেল্লাল হোসেন কারীর কার্যক্রম বহাল রাখতে বলা হয়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, যথাসময়ে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, কেন্দ্র থেকে ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর ৬ মাসের জন্য জেলা শ্রমিক লীগের সম্মেলন প্রস্তুতির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে ইউছুফ পাটওয়ারীকে আহ্বায়ক ও বেল্লাল হোসেনকে সদস্য সচিব করা হয়। ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সম্মেলন না হওয়া পর্যন্ত কমিটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এরপর এ কমিটির নেতারা সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
সবশেষ গত শনিবার রাতে কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মান্নান জেলা কমিটি ঘোষণা করেন। এতে জাকির হোসেন পাটওয়ারীসহ ৩৩ জনকে যুগ্ম-আহ্বায়ক করা হয়। নতুন কমিটি অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি তোফায়েল আহমেদ ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. খান সিরাজুল ইসলাম।
নতুন কমিটি প্রসঙ্গে ইউছুফ পাটওয়ারী বলেন, বিতর্কিত তোফায়েল আহমেদ পকেট ভারি করার জন্য বাণিজ্য শুরু করেছেন। তিনি প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কাজ করেন। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির বহু অভিযোগ রয়েছে। লক্ষ্মীপুরে তোফায়েল আহমেদকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হবে। বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই, দলকে তৃণমূল পর্যায়ে শক্তিশালী করার জন্য আমরা কাজ করছি।
এ বিষয়ে তোফায়েল আহমেদ বলেন, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কোনো সভা-মিটিংয়ে আসেন না। আমরা ২৮ নেতা সভাপতির পক্ষে। লক্ষ্মীপুর আমার জেলা, সেখানের নতুন কমিটির জন্য বাণিজ্যের অভিযোগ মিথ্যা। সাধারণ সম্পাদক কোনো কমিটি বাতিল করতে পারেন না।
কে এম আযম খসরু বলেন, আমাদের গঠনতন্ত্রে বলা আছে, সভাপতি কমিটির জন্য সুপারিশ করবেন এবং আমি অনুমোদন দেব। কিন্তু অনিয়মতান্ত্রিকভাবে টাকার বিনিময়ে লক্ষ্মীপুরে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। দলের মধ্যে বিভাজন করার জন্য এটি করা হয়। সাংগঠনিক পদাধিকার বলেই আমি তা বাতিল করে আগের কমিটি বহাল রেখে চিঠি দিয়েছি।
তবে নুর কুতুব আলম মান্নান বলেন, লক্ষ্মীপুর জেলা কমিটি সম্মেলন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ জন্য কার্যনির্বাহী পরিষদের সিদ্ধান্তমতে আমি নতুন কমিটি অনুমোদন দিয়েছি। ৬ মাসের জন্য এটি করা হয়। এতে কমিটির এক সহ-সভাপতি ও প্রথম যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের সুপারিশ ছিল।