লক্ষ্মীপুরের রায়পুর থানার ও দুটি পুলিশ ফাঁড়ির অভ্যন্তরে মোটরসাইকেল এবং চোরাই তেলের গাড়ি সহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন অযত্ন, অবহেলা ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। রোদ-বৃষ্টি আর ধুলা-ময়লার স্তূপে এসব যানবাহনের যন্ত্রাংশে মরিচা পড়ে বিকল হয়ে পড়ছে। মামলা জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন-অবহেলায় এসব যানবাহন পড়ে থেকে হারিয়ে ফেলছে চলাচলের ক্ষমতা।
চুরি, সড়ক দুর্ঘটনা, চোরাই পণ্য, মাদকদ্রব্য বহনসহ বিভিন্ন অভিযোগে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ জব্দ করে মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ইত্যাদি। জব্দ করার পর মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এসব যানবাহন অযত্নে পড়ে থাকে থানা চত্বরে। এক পর্যায়ে এগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। মূলত তিনটি কারণে থানায় জব্দ যানবাহন নষ্ট হচ্ছে। গাড়ি ছাড়িয়ে নিতে মালিকের না আসা, আদালতের নির্দেশনা ছাড়া এসব যানবাহন নিলামে বিক্রি করতে না পারা এবং থানা কর্তৃপক্ষও জব্দ যানবাহন সম্পর্কে আদালতকে অবগত না করা।
থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে জানা যায়, মামলার আলামত হিসেবে এসব যানবাহন জব্দ করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে খোলা আকাশের নিচে মাসের পর মাস পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। দিনে দিনে যানবাহনগুলো বিকল হয়ে পড়লেও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। আদালতে প্রমাণস্বরূপ বিভিন্ন মামলায় এসব যানবাহনের আলামত নষ্ট হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন অনেকে।
রায়পুরে মোটরসাইকেল ও সিএনজি চালক জাবেদ হোসেন ও নজরুল ইসলামসহ কয়েকজন বলেন, থানায় ও দুটি পুলিশ ফাঁড়িতে অনেক গাড়ি পড়ে আছে। এসব গাড়ি বিক্রি করে দিলে যেমন থানার পরিবেশ বাঁচবে, তেমনি সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব পাবে।
স্থানীয়রা বলেন, বছরের পর বছর রোদ-বৃষ্টিতে শত শত যানবাহন মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে। থানায় পড়ে থাকা এসব যানবাহন নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করলে অনেকেই এগুলো কিনতে পারবে।
অ্যাডভোকেট মারুফ বিন জাকারিয়া বলেন, চোরাই পণ্য, মাদকদ্রব্য বহন, চুরি, দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন কারণে জব্দ করা যানবাহন সিজার লিস্টের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তখন এগুলো চলে যায় আদালতের জিম্মায়। থানার মাধ্যমে মালিক এলে আদালতের নির্দেশে সেটি মালিকের জিম্মায় দেওয়া যায়। মূলত বেশির ভাগ সময় মালিক আসেন না। মামলার আলামত হিসেবে থানা কর্তৃপক্ষও এগুলো সরাতে পারে না। এর থেকে বের হতে নতুন পদ্ধতি ভাবা দরকার। আর কিভাবে গাড়িগুলো ব্যবহার করা যায়, তা-ও ভাবতে হবে।
রায়পুর থানার ওসি শিপন বড়ুয়া বলেন, গাড়িগুলো বিভিন্ন মামলার আলামত। আদালত নির্দেশনা না দিলে আমাদের কিছু করার নেই। কাগজপত্র না থাকলে কিংবা আদালতে মামলা থাকলে নিষ্পত্তির জটিলতায় বেশির ভাগ মালিক যোগাযোগ করেন না। আদালতের নির্দেশনা না আসায় গাড়িগুলো মালিককে ফের দেয়া যায় না। হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ির সামনে পড়ে থাকা তেল এর গাড়ির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে বলত পারবো।