আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে আগামীকাল বুধবার (১৫ নভেম্বর) বিকেল ৫টায় বৈঠকে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ওই বৈঠকের পরেই সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষণ সম্প্রচারের মাধ্যমে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। ইসি সূত্র এই তথ্য জানিয়েছে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার আগে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশন। এরপর বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতারে প্রাধান নির্বাচন কমিশনারের ভাষণ রেকর্ড করা হয়। সন্ধ্যায় ওই ভাষণ প্রচার করা হয়। ওই ভাষণেই মূলত তফসিল ঘোষণা করা হয়।
গতকাল নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব মোঃ জাহাংগীর আলম বলেছিলেন, আগামী বুধবারের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।
আরও পড়ুন— ১৫৭ প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার ৪১ অবকাঠামো উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেছেন, নভেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা হবে এটা ইসি থেকে আগেই বলা হয়েছিল। প্রথমার্ধের দিন যেহেতু সামনে আছে, তাই আপনারা অপেক্ষা করুন।
এর আগে গত ৯ নভেম্বর বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার অনুমতি নেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে আমরা বদ্ধপরিকর। দ্রুত সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। এছাড়া তফসিল ইস্যুতে প্রধান বিচারপতির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন সিইসি।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচনের পর সংসদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। তাই সংবিধান অনুযায়ী, বর্তমান সংসদের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। পরবর্তী সংসদের জন্য ভোটগ্রহণ করতে হবে তার আগের ৯০ দিনের মধ্যে। অর্থাৎ গত ১ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয়েছে। আর ২৯ জানুয়ারির মধ্যে রয়েছে নির্বাচন সম্পন্ন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
আরও পড়ুন— দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম সার কারখানা উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৩৩ জন। আর ভোটকেন্দ্র ৪২ হাজার ১০৩টি।
এদিকে তফসিল ঘোষণা না করার জন্য বিরোধিতা করে আসছে বিরোধী দলগুলো। বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না করে নির্বাচন কমিশনকে পদত্যাগের দাবি জানান। তিনি বলেন, শিডিউল ঘোষণা করবেন না, করলে জাতি আপনাদের অভিশাপ দেবে। এর ফলে সংবিধানও লঙ্ঘন হবে, অন্যায়ও হবে।
ভোটারদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অস্ত্র উদ্ধার সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করছি— আপনারা শিডিউল দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। দয়া করে পদত্যাগ করেন। এ জাতীয় কলঙ্ক আপনারা ঘাড়ে নেবেন না।
তিনি আরও বলেন, শিডিউল ঘোষণা করলেও ভোটাধিকারের আন্দোলন চলবে, বা আরও কিছু করলেও চলবে।