কুড়িগ্রামের ভরা বর্ষায়ও বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন চাষিরা। আশঙ্কা করছিলেন এ বছর হয়তো আমনের আশানুরূপ ফলন পাওয়া যাবে না। কিন্তু গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে আমনের খেতে প্রাণ ফিরেছে। বৃষ্টিতে মনে স্বস্তি ফিরেছে আমন ধান চাষীদের।
গত দুই-তিনদিনের টানা বৃষ্টিতে আমন খেত তরতাজা হয়ে উঠেছে। তবে এ বৃষ্টি আর্শিবাদ হয়ে দেখা দিয়েছে এ জনপদের আমন ধান ও শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজির খেত। ভরা বর্ষাকাল পেরিয়ে বৃষ্টির দেখা না পেলেও শরতের প্রথম সপ্তাহে টানা ভারী বৃষ্টিপাতে হাজার হাজার কৃষকের মন ভরে গেছে।
জেলার উলিপুর চাষি বিপুল চন্দ্র অধিকারী, হেমন্ত চন্দ্র, মকবুল হোসেন, বাবর আলী জানান, বৃষ্টির জন্য দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করেছি। তবু বৃষ্টির দেখা নাই। তাই বাধ্য হয়ে কিছু জমিতে সেচযন্ত্র দিয়ে চাষাবাদ শুরু করেছি। এর মধ্যে গত কয়েক দিন ধরে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ায় বাকি জমিগুলোর চাষাবাদ সম্পূর্ণ করেছি। এখন আর বাড়তি খরচ লাগল না।
একই উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের সামছুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি না থাকায় প্রথমে ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিনে সেচ দিয়ে আমনের চারা রোপণ করতে হয়েছে। বাড়তি খরচ করতে হয়েছে। লাগাতার বৃষ্টি না হওয়ায় ক্ষেতের মাটি ফেটে গিয়েছিল। আশানুরূপ ফলনের আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম।
জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার কৃষক আবুল হোসেন জানান, আমন আবাদটা কৃষকের অনেক লাভজনক। তাই যেভাবেই হোক আমরা আমনের চারা রোপন করেছি। কারণ, এতে সেচ লাগে না বৃষ্টির পানিই যথেষ্ট। এতে ফলনও ভালো পাওয়া যায়।
একই উপজেলার মন্টু চন্দ্র রায় জানান, এ বছর ভরা আমন চাষের বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় আমরা শ্যালো মেশিন ও সেচের পানি দিয়ে বোরো ধানের মতো ব্যয় করে আমনের চাষাবাদ করেছি। শ্যালোমেশিন ও সেচ দিয়ে গত ১ মাস আমন খেতে পানি দেওয়া অব্যাহত ছিল। হঠাৎ দুই দিনের টানা ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় আমন খেত দেখে সত্যিই আমাদের মন ভরে গেছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে হাইব্রীড জাত ১২ হাজার ৭৫০ হেক্টর, উফশী ৯৪ হাজার ৫০০ হেক্টর এবং স্থানীয়জাত ১২ হাজার ৭০০ হেক্টর। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৫৫৫ মেট্রিকটন।এবার ৫ লাখ ৮ হাজার ৪৯৩ জন কৃষক আমনচাষে যুক্ত হয়েছেন।