লক্ষ্মীপুর বিদুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবির) কর্মকর্তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কার্যালয়টির ভিতরে ও বাহিরে নির্বাহী প্রকৌশলীর নেতৃত্বে একাধিক সিন্ডিকেট কাজ করে বলে অভিযোগ রয়েছে। উপ সহকারী প্রকৌশলী মশিউর রহমান এবং (সাময়িক চাকরিচ্যুত) লাইনম্যান কামরুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে কার্যালয়টিতে সিন্ডিকেট তৈরি করেন খোদ নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামিম ফরহাদ। মূলত এই তিন সিন্ডিকেটই পুরো কার্যালয়ের অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এদের মধ্যে লাইনম্যান কামরুল ইসলামকে ৫ বছর আগে একটি মামলার তদন্তের স্বার্থে সাময়িকভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়। কিন্তু তিনি গ্রাহকদের বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মিটার চেক করার নামে ভোগান্তি সৃষ্টি করে। একপ্রকার মিটারের বিভিন্ন সমস্যা দেখিয়ে গ্রাহকদের জিম্মি করে টাকা আদায় করার অভিযোগ রয়েছে এই কামরুলের বিরুদ্ধে।
একাধিক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, নতুন মিটারের জন্য সরকার নির্ধারিত টাকার চেয়ে অতিরিক্ত ফি দিয়ে আবেদন করতে হয়। আবেদনের পর প্রথম ধাপে লাইনম্যান কামরুল ইসলাম গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ করে মিটার সংযোগ দিতে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। গ্রাহক রাজি হলে প্রথম ধাপেই সংযোগ স্থাপন হয়। কিন্তু গ্রাহক অতিরিক্ত টাকা দিতে রাজি না হলে উপ সহকারী প্রকৌশলী মশিউর রহমান দায়িত্ব পায়। তিনি মিটার সংযোগ স্থাপনের প্রতিষ্ঠান কিংবা বাসাবাড়ি সরেজমিনে পরিদর্শন করে। এরপর বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে দীর্ঘদিন সংযোগ দেয়া বন্ধ রাখে ও নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে দেখা করতে বলে। একপর্যায়ে নিরুপায় হয়ে গ্রাহক নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করে টাকা দিতে রাজি হয়। এরপর দ্বিতীয় ধাপে উপ সহকারী প্রকৌশলী মশিউর রহমান এর মাধ্যমে দফারফা হয় এবং শেষ ধাপে চাহিদা মত মোটা অংকের টাকা দিয়ে গ্রাহক মিটার সংযোগ পায়।
লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ হোসাইন আহমেদ হেলাল বলেন, জেলার নিরীহ বিদ্যুৎ গ্রাহকদের পক্ষে নির্বাহী প্রকৌশলী এর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। সেখানে নির্বাহী প্রকৌশলীর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিস্তর তুলে ধরা হয় এবং তার বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করি।
সাময়িক চাকরিচ্যুত লাইনম্যান কামরুল ইসলাম বিষয়টি অস্বীকার করলেও পিডিবির উপ সহকারী প্রকৌশলী মশিউর রহমানের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
লক্ষ্মীপুর বিদুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবির) নির্বাহী প্রকৌশলী হোসেন মাহমুদ শামিম ফরহাদ বলেন, কেউ আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ না আসলে আমি জানবো কী করে যে দুর্নীতি হচ্ছে।