দেড় দশক আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান চিত্রনায়ক আসলাম তালুকদার মান্না। যাওয়ার আগে কাজ করছিলেন ‘জীবন যন্ত্রণা’ নামক সিনেমাটির। তখন অবশ্য এটির নাম ছিল ‘লীলামন্থন’। পরে সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে নাম পাল্টে ফেলা হয় এই সিনেমাটির। দীর্ঘ সময় সিনেমাটি সেন্সর বোর্ডে আটকে থাকার পর ২০২১ সালের অক্টোবরে মুক্তির অনুমতি পায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এই সিনেমাটি।
মান্নার মৃত্যুর পর বেশ কয়েকবার মুক্তি দিতে চাইলেও নানা জটিলতায় আলোর মুখ দেখেনি ছবিটি। তবে মান্না ভক্তদের জন্য সুখবর হচ্ছে, চলতি বছরের ১৫ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে সিনেমাটি। বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে প্রেক্ষাগৃহে আসছে মান্না অভিনীত শেষ সিনেমা। সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই নিশ্চিত করেন ছবিটির প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু।
আরও জানা যায়, ২০০৫ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘লীলামন্থন’ নামে সিনেমাটির শুটিং শুরু করেন মান্না। সিনেমাটির কিছু দৃশ্য বাকি থাকতেই ২০০৮ সালে নায়কের মৃত্যু হয়। বাকি অংশের কাজ শেষ করে সিনেমাটি ২০১১ সালে সেন্সর বোর্ডে জমা পড়ে; কিন্তু নামের কারণে দীর্ঘ সময় সেন্সরে আটকে থাকে। অবশেষে নাম বদলে প্রদর্শনের অনুমতি পেয়েছে সিনেমাটি।
‘জীবন যন্ত্রনা’ সিনেমাটিতে মুক্তিযুদ্ধের ভিন্ন এক গল্প উঠে আসবে। তুলে ধরা হয়েছে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যৌনকর্মীদের অবদানের কথা। ১৯৭১ সালের দেশের এক যৌনপল্লীর কর্মীদের জীবনের ঘাত প্রতিঘাত আর বেঁচে থাকার কাহিনিকে রুপালি পর্দার জন্য ফ্রেমবন্দি করেছেন পরিচালক জাহিদ হোসেন।
আরও পড়ুন- বর্তমান প্রেক্ষাপটে তরুণদের দিক নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী
২০১১ সালে সেন্সরে জমা পড়লেও ছবিটি ছাড়পত্র পায় এক দশক পর ২০২১ সালে। ছবিটির পরিচালক জাহিদ হোসেন আরও জানান, সিনেমাটির শেষ দৃশ্য ও ডাবিংয়ের কাজ শেষ করে যেতে পারেননি মান্না। এর আগেই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় হন তিনি। পরে ডামি ব্যবহার করে গ্রেনেড হামলায় তার শহিদ হওয়ার দৃশ্যধারণ করা হয়। মান্নার অংশের আংশিক ডাবিং করেন অভিনেতা রাতিন।
প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময়কার গল্পের সিনেমা এটি, সংগত কারণে মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ দিনকে সামনে রেখেই মুক্তি দিতে চাই। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৫ ডিসেম্বর মুক্তি পাবে সিনেমাটি।’
নায়ক মান্নার মৃত্যুর এত দিন পর ছবি মুক্তি দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যায় খসরু বলেন, “লীলামন্থন’ নাম দিয়ে সিনেমার কাজ শুরু করেছিলাম। ওই নামে ২০১১ সালে সেন্সরে জমা দিই। নাম নিয়ে সেন্সর বোর্ডের আপত্তির কারণে ছাড়পত্র পেতে দেরি হয়। নানা জটিলতায় এরপর সিনেমাটি মুক্তি দেওয়া সম্ভব হয়নি। করোনার কারণেও মুক্তি পিছিয়ে যায়। আমি মনে করি, এই সময়ে তারকাবহুল সিনেমাটির আবেদনও অনেকটাই কমে গেছে। সিনেমাটি মুক্তি দিলেও হয়তো লোকসান হবে। এরপরও এটি মুক্তি দিতে চাই। মান্নাভক্ত ও সাধারণ দর্শক অপেক্ষায় আছেন সিনেমাটির জন্য।’
মুক্তিযুদ্ধের সময়ের একদল যৌনকর্মীর মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে ‘জীবন যন্ত্রণা’। এতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মৌসুমী, পপি, শাহনূর, মুক্তি, দীঘি, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, আনোয়ারা, শহিদুল আলম সাচ্চু, মিশা সওদাগরসহ আরও অনেকে।