ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে বেসরকারিভাবে বিজয়ী নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ এ আরাফাত। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২৮ হাজার ৮১৬ ভোট।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম পেয়েছেন ৫ হাজার ৬০৯ ভোট। তার প্রতীক হচ্ছে একতারা।
সোমবার (১৭ জুলাই) ভোটগ্রহণ শেষে রাত ৯টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ মুনীর হোসাইন খান নৌকার প্রার্থী আরাফাতকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। আরাফাত পেয়েছেন ২৮ হাজার ৮১৬ ভোট।
রাজধানী ঢাকার গুলশান, বনানী, ক্যান্টনমেন্ট ও ভাসানটেকের কিছু এলাকা নিয়ে গঠিত সংসদীয় এ আসন।
সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী সিকদার আনিসুর রহমান (লাঙ্গল) পেয়েছেন এক হাজার ৩২৮ ভোট।
এই উপনির্বাচনে ১১ দশমিক ৫১ শতাংশ ভোট পড়েছে।
মোহাম্মদ এ আরাফাত সবচেয়ে বেশি পরিচিত সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে। টেলিভিশন ‘টক শো’তে পরিচিত মুখ আরাফাত আওয়ামী লীগের কার্যনিবাহী কমিটির সদস্য।
আরও পড়ুন- বনানীতে হিরো আলমের উপর সন্ত্রাসী হামলা
আরাফাত কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্ট্র্যাটেজিক ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড পলিসি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জ, ট্রানজিট এবং কানেক্টিভিটি, বিদ্যুৎ খাতের জন্য উপযুক্ত নীতি, যুদ্ধাপরাধের বিচার, বাংলাদেশে রাজনৈতিক উন্নয়ন এবং গণতন্ত্র ইত্যাদির মতো বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে অনেক নিবন্ধ লিখেছেন তিনি।
সোমবার (১৭ জুলাই) সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ হয়। ভোট শেষে সারা দিনের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে নির্বাচন কমিশনার মোঃ আলমগীর। তিনি বলেন, ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রেই সুষ্ঠুভাবে ভোট হয়েছে।
ভোটে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অভিযোগ না এলেও ঢাকা-১৭ আসনে ভোট শুরুর কয়েক ঘণ্টা পর স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. তারেকুল ইসলাম ভূঁঞা ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। তার অভিযোগ, কেন্দ্র তাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি এবং প্রতিটা কেন্দ্রে জোর করে নৌকা প্রতীকে সিল দেওয়া হচ্ছে।
অপরদিকে ভোটকেন্দ্র থেকে নিজের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন একতারা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম। একটি কেন্দ্রে গিয়ে তিনি মারধরের শিকার হন। তার ওপর হামলার অভিযোগে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন- নাগেশ্বরীতে বন্যার উন্নতি হলেও কমেনি ৩ হাজার পরিবারের দুর্ভোগ
নির্বাচন কমিশনার আলমগীর এটাকে ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’ উল্লেখ করে বলেছেন, ‘স্বতন্ত্র ওই প্রার্থী লোকজন নিয়ে কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করতে চেয়েছিলেন। তখন পুলিশ বাধা দিয়েছে।’
গত মে মাসে চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য আকবর খান পাঠানের (ফারুক) মৃত্যুর পর শূন্য ঘোষণা করা হয় ঢাকা-১৭ আসন। এরপর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন চলে আসায় এই আসনে নির্বাচিত হয়ে মাত্র কয়েক মাসের জন্য সংসদে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন বিজয়ী।
তিন লাখ ২৫ হাজার ভোটারের এই সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে লড়েছেন আটজন প্রার্থী। উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ৩৭ হাজার ৪২০। এরমধ্যে বাতিল হয়েছে ৩৮৩টি ভোট।
এদের মধ্যে রয়েছেন- আওয়ামী লীগের মোহম্মদ আলী আরাফাত (নৌকা), জাতীয় পার্টির সিকদার আনিসুর রহমান (লাঙ্গল), জাকের পার্টির কাজী মোঃ রাশিদুল হাসান (গোলাপ ফুল), তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোঃ রেজাউল ইসলাম স্বপন (ডাব) এবং বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মোঃ আকবর হোসেন (ছড়ি) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মোঃ আশরাফুল আলম হিরো আলম এবং মোঃ তারেকুল ইসলাম ভূঞা (ট্রাক) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।