বড় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই বরিশাল ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।
সোমবার (১২ জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা চলে ভোটগ্রহণ। এখন ভোট প্রদান শেষে চলছে ভোট গণনার কাজ। এই প্রথম দুই সিটি করপোরেশনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএমে) ভোট নেয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে ছিল কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন
নগরীর কালীবাড়ি রোডের সরকারি বরিশাল কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেয়ার পর আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, ‘নির্বাচনে ফল যা-ই হোক, মেনে নেব।’
আরও পড়ুন- কেসিসি নির্বাচনঃ বিএনপির ৮ নেতাকে আজীবন বহিষ্কার
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির বলেন, ‘দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। এখন চলছে গণনা। প্রতিটি ওয়ার্ডের ফলাফল প্রিজাইডিং অফিসাররা নিয়ে আসার পর আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।’
তবে, বরিশালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিমের ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তিনি পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
নির্বাচনে ১২৬টি ভোটকেন্দ্রের ৮৯৪টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১ হাজার ১৪৬টি সিসি ক্যামেরার আওতায় ছিল পুরো নির্বাচন। এতে মোট ভোটার ২ লাখ ৭৬ হাজার ২৯৮ জন।
মেয়র পদে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আবদুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত (নৌকা), জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম (হাতপাখা), জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু (গোলাপ ফুল), স্বতন্ত্র প্রার্থী মোঃ কামরুল আহসান (ঘড়ি), আসাদুজ্জামান (হাতি) ও আলী হোসেন (হরিণ)।
এ ছাড়াও নগরীর ৩০ ওয়ার্ডে ১১৮ জন সাধারণ এবং ৪২ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন
এদিন নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সাউথ সেন্ট্রাল রোডে পাইওনিয়ার মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। ভোট দেয়া শেষে তিনি বলেন, ‘সবাই শান্তিপূর্ণভাবে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দিচ্ছেন। জনগণ যে রায় দেবে আমি সেটাই মেনে নেব।’
আরও পড়ুন- বরিশালে হাতপাখার মেয়র প্রার্থী ফয়জুলকে মারধরের অভিযোগ
খুলনা নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে ২৮৯ ভোটকেন্দ্রের ১ হাজার ৭৩২টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোটকেন্দ্র সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ২ হাজার ৩১০টি সিসি ক্যামেরা। নির্বাচনে ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রে মোট ভোটার ছিলেন ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ এবং পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন।
খুলনায় মেয়র পদে ৫ জন এবং ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এরই মধ্যে নগরীর ১৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
মেয়র পদে তালুকদার আব্দুল খালেক (আওয়ামী লীগ, নৌকা প্রতীক), মোঃ আঃ আউয়াল (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হাত পাখা), মোঃ শফিকুল ইসলাম মধু (জাতীয় পাটি, লাঙ্গল), এস এম শফিকুর রহমান (স্বতন্ত্র, টেবিল ঘড়ি) এবং এস এম সাব্বির হোসেন (জাকের পার্টি, গোলাপ ফুল) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
এদিকে সিসি ক্যামেরায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের বেজমেন্টে স্থাপিত সিসিটিভি মনিটরিং কন্ট্রোল রুম থেকে সরাসরি ভোটগ্রহণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন নির্বাচন কমিশনাররা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা ও মোঃ আলমগীর।