সিলেটে চলছে ৮ম নারী এশিয়া কাপ। গত ১ অক্টোবর থেকে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হয় এবারের আসর। স্বাগতিক বাংলাদেশসহ এবারের আসরে অংশ নিয়েছে ৭টি দল। গুরুত্বপূর্ণ এই আসরে গুরুত্ব নেই দায়িত্বশীলদের।
সিলেটে আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হলে গ্যালারিতে ক্রিকেটপ্রেমীদের ঠাঁই দেওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। কিন্তু এবার টিকিটবিহীন প্রবেশাধিকার থাকলেও আসরের শুরু থেকে বলতে গেলে ফাঁকা গ্যালারি। আয়োজকদের প্রচারণার অভাবে দর্শকরা মাঠমুখি হননি বলে রয়েছে অভিযোগ। এদিকে আসর শুরুর পর থেকেই একের পর এক সমালোচনা হচ্ছে নারী এশিয়া কাপ নিয়ে। মাঠ থেকে প্রেসবক্স এমনকি সাংবাদিকদের খাবারের মান নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
মাঠের উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ নারী দলের কোচ এ কে এম মাহমুদ ইমন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাড়ার মাঠেও এর চেয়ে ভালো পিচ থাকে। এরপর উইকেটের অবস্থা যাচাই করতে চট্টগ্রাম থেকে আনা হয় পিচ কিউরেটর। এমনকি স্টেডিয়ামের প্রবেশদ্বারে ময়লার ভাগাড় দেখে এবং অপরিচ্ছন্নতা দেখে ধারাভাষ্যকাররাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে বাথরুম ও বেসিনের পানির কল ছিল নষ্ট। পরে সাংবাদিকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসব ঠিক করা হয়।
আরও পড়ুন- জন্মের পরই দেওয়া হবে এনআইডিঃ মন্ত্রিপরিষদ সচিব
এবারের এশিয়া কাপে আম্পায়ার ও সাংবাদিকদের খাবার নিয়েও উঠেছে অভিযোগ। নামে বুফে খাবার হলেও পরিবেশন করা হচ্ছে নিম্ন মানের খাবার। খেলার সংবাদ সংগ্রহ থেকে বিরত রয়েছেন অনেক সাংবাদিক। কিন্তু খালি নেই প্রেসবক্স। যথাযথ নিয়মে আবেদন করেও অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড পাননি টেলিভিশন সাংবাদিক ও ক্যামেরাপারসন, নিবন্ধিত অনলাইন পোর্টালের সংবাদকর্মীরা।
অথচ অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড ইস্যু হয়েছে অনিবন্ধিত একাধিক নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকদের নামে। শুধু তাই-ই নয় একজনের নামের জায়গায় এসেছে অন্যজনের নাম। কর্মকর্তাদের এমন খামখেয়ালিপনা ও দায়িত্বহীনতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিলেটের মূল ধারার সংবাদকর্মীরা।
ঢাকা পোস্টের সিলেট প্রতিনিধি মাসুদ আহমদ রনির ছবি সম্বলিত কার্ড ইস্যু হয়েছে ‘সাগর রায়’ এর নামে। ছবি ঠিক থাকলেও কর্মরত পোর্টাল দেখানো হয়েছে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘নিউজ চেম্বার।’ একই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সংবাদকর্মীর নামে ডাবল কার্ড ইস্যু হয়েছে।
একইভাবে নিউনেশন পত্রিকার সিলেট প্রতিনিধি শফি আহমদকে দেখানো হয়েছে ডিবিসি নিউজ -এর সংবাদকর্মী। নিউজ ওয়ার্ল্ড নামের আরও একটি অনলাইনের নামে অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড ইস্যু হয়েছে। ওই অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাহকের নাম আলমগীর হোসেন। যিনি পেশায় একজন ফুল বিক্রেতা!
এর বাইরেও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন মামলার আসামিদের দেওয়া হয়েছে অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড। যারা নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেন না। অথচ এমনটি হবার কথা নয়। প্রতিবার আন্তর্জাতিক ম্যাচেও অন্তত স্থানীয়, জাতীয়, অনলাইন, টেলিভিশন মিডিয়া, ক্যামেরাপারসন ও ফটো জার্নালিস্ট মিলিয়ে শতাধিক কার্ড ইস্যু হয়। কিন্তু এবার সিটিএসবি’র তদন্তের দোহাই দিয়ে অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড সীমিত রাখা হয়। এ নিয়ে কারণ জানতে চাইলে সংশ্লিষ্টরা গোয়েন্দা সংস্থার দোহাই দেন।
প্রেসকার্ড ইস্যুর বিষয়ে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের স্থানীয় মিডিয়া ম্যানেজার ফরহাদ কোরেশি বলেন, প্রেসকার্ড ইস্যু করার সময় কে নিবন্ধিত এবং কে অনিবন্ধিত পোর্টালে কাজ করেন তা বিবেচনা করার সময় নেই।
আরও পড়ুন- মিথেন গ্যাস কমাতে ‘বৈশ্বিক অঙ্গীকারে’ বাংলাদেশের সম্মতি
একজন ফুল বিক্রেতার নামে কীভাবে কার্ড ইস্যু হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এত বড় আসরে কিছুটা ভুল থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
ঢাকা পোস্টের প্রতিনিধি’র নাম মাসুদ আহমদ রনি থেকে ‘সাগর রায়’(কার্ড নং-১১৬১) হয়ে গেল কীভাবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি ক্ষেপে গিয়ে বলেন, আপনার কার্ড কার কাছে জমা দিয়েছিলেন? আপনি পরবর্তীতে কার্ড জমা দিলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে দিয়ে যাবেন।
তাহলে বিসিবির দায়িত্বশীল কার কাছে এর জবাব পাওয়া যাবে জানতে চাইলে ফরহাদ কোরেশি রাবিদ ইমাম নামের এক কর্মকর্তার নাম বলেন। তবে রাবিদ ইমামের মোবাইল নম্বর চাইলে তিনি জানান, রাবিদ ইমাম এখন নিউজিল্যান্ডে আছেন।
এদিকে খাবার নিয়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে একাধিক সাংবাদিক বলেন, একটি ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচে সাংবাদিকদের জন্য ফুটপাতের খাবার রাখা হয়েছে। নিম্ন মানের খাবার দিয়ে নাম দেওয়া হয়েছে বুফে সিস্টেম। কর্মচারীদের দিয়ে এই খাবার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তা ছাড়া মিডিয়া বক্সে অবাঞ্ছিত লোকদেরও কার্ডের বিপরীতে খাবার খেতে দেখা যায়।- স্বদেশ প্রতিদিন