লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউপির মণ্ডলতলী এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌস আরার উপস্থিতিতে কবরস্থান থেকে দাফনের তিন বছর পর কবর থেকে কিশোরী রিয়া আক্তারের(১৩) মরদেহ উত্তোলন করে ফরেনসিকে পাঠায় ডিবি পুলিশ।
রিয়া টঙ্গীর আউচপাড়া এলাকার রাজু আহম্মেদ এর মেয়ে। সে টঙ্গী আউচপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। তার নানার বাড়ি লক্ষ্মীপুরে।
২০১৯ সালের ১৬ আগষ্ট রাজধানীর একটি বাড়ীর ছাদ থেকে পড়ে নিহত হয়েছে মর্মে ধানমন্ডী থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। ওই মামলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এতে নারাজী দিয়ে ওই কিশোরীর মা কুলসুম বেগম এটিকে ছাদ থেকে ফেলে হত্যার দাবি করলে ঢাকার একটি আদালত ডিএনও টেস্ট এর জন্য মরদেহ উত্তোলনের আদেশদেয়।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩ আগস্ট রিয়া ও শিমলা নামে দুই কিশোরীকে গৃহকর্মীর কাজের কথা বলে ধানমন্ডির ৯১নং বাসায় নিয়ে যায় তাদের পরিচিত জাকির হোসেন। এর ৪/৫ দিন পর রিয়া ফোন দিয়ে কান্নাজনিত কন্ঠে বলে মা আমি এ বাসায় ভালো নেই, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে বলে জানান রিয়া। একই বছরের ১৬ আগস্ট ভোরে একটি প্রাইভেটকারে কয়েকজন লোক গিয়ে রিয়া অসুস্থ বলে জানায়। পরে বাসায় গিয়ে দেখে রিয়া মারা গেছে। এসময় বাসার মালিক মমিনুল ১০ম তলা বিল্ডিংয়ের বেলকুনি দিয়ে শাড়ী বেয়ে নামার সময় রিয়া পড়ে মারা গেছে বলে জানান। পরে একটি কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। পরের দিন লক্ষ্মীপুর সদরের হামছাদী এলাকায় নিহতের নানার বাড়ীর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নিহতের মা কুলসুম বেগম বলেন, ন্যায় বিচারের স্বার্থে মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করি। মামলাটি পিবিআই ২০২১ সালের ৭ জুলাই তদন্ত গ্রহন করেন। মামলা তদন্ত কালে বিভিন্ন স্বাক্ষী, জবানবন্দী, ঘটনাস্থলের বিভিন্ন ফুটেজ সংগ্রহ করে আদালতে চলতি বছরের ৩ মার্চ পিবিআই প্রতিবেদন দাখিল করেন। মামলার চলমান প্রক্রিয়ায় প্রতিবেদন উপযুক্ত মনে না করায় আদালত মামলাটি ডিএনএ টেষ্ট করার জন্য ডিবিকে লাশ উত্তোলনের নির্দেশ প্রদান করেন। এসময় তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তির দাবি জানান।
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফেরদৌস আরা জানান, মামলার তদন্তের স্বার্থে আদালতের নির্দেশে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্ত করা হবে।