ভোটের মাঠের সংবাদ সংগ্রহে গণমাধ্যমকর্মীদের বাধা দিলে তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) সংশোধনের সুপারিশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোঃ আহসান হাবিব খান।
আহসান হাবিব খান বলেন, ‘আমরা কিছু কিছু আইন পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছি। যেহেতু আপনারা (সাংবাদিকেরা) আমাদের চোখ, কান এবং আমাদের বদলে আপনারা হাজির থেকে সঠিকভাবে কাভার করেন। আপনাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরা কিন্তু আইনে নতুন একটা বিধান সংযোজন করেছি। সেটা হচ্ছে কেউ যদি আপনাদের বাধা দেয়, যদি আপনাদের অ্যাসল্ট করে, যদি আপনাদের ইকুইপমেন্ট এবং সঙ্গীসাথি যারা আছে, তাদের যদি কোনো ক্ষতি করার চেষ্টা করে সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ তিন বছর এবং ন্যূনতম এক বছর জেলের বিধান রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও জরিমানার বিধান রয়েছে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে আহসান হাবিব বলেন, ‘আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়েছি সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে অনিয়ম, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার।’ তিনি জানান, এই নির্বাচনে ২৬৫টি ভোটকক্ষে ৩৬৫টি সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুম ইসির প্রধান কার্যালয়েই আছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যেখানে যেটা অনিয়ম ধরা পড়েছে, সেখানেই ইসি ব্যবস্থা নিয়েছে।
আরও পড়ুন- জাতীয় নির্বাচনে দেড় শ’ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ইসির
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘জোরপূর্বক একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, আমরা চিহ্নিত করেছি। মাঠ প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি নিশ্চিত হওয়া ছাড়াও যারা সন্ত্রাসী, জোরপূর্বক ভোট দেওয়ার চেষ্টা করে, তারা ভয়ের মধ্যে থাকে। ১১টা বুথে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আমরা অনিয়মে জড়িতদের সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় এনেছি।’
আগামী সংসদ নির্বাচনেও সব কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা দেওয়ার ভাবনা রয়েছে বলে জানান আহসান হাবিব খান। তবে ইন্টারনেট ও বিদ্যুৎ অনেক জায়গায় নেই। ফলে ইসির এই ইচ্ছা কিছুটা বাধাগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘কোথাও কোথাও বিদ্যুৎ, ইন্টারনেটও নেই। তবে আমাদের ইচ্ছা আছে।’
এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘বাজেট বরাদ্দের ঘাটতি থাকলে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে সিসি ক্যামেরা দেব। তবে, ইচ্ছা আছে পুরো নির্বাচনটাকেই সিসি ক্যামেরার মধ্যে আনা। সংসদের আগে যত নির্বাচন হবে সবগুলোতে ইভিএম ব্যবহার করব এবং সিসি ক্যামেরা থাকবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সিসি ক্যামেরার প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে। এটা লাক্সারি নয়, এখন প্রয়োজন।’