তিন বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিপক্ষীয় সফরে যাচ্ছেন ভারতে, তার এই সফরে অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো নিষ্পন্নে দিক-নির্দেশনা আশা করা হচ্ছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে চার দিনের সফরে সোমবার দিল্লি রওনা হচ্ছেন বাংলাদেশের সরকার প্রধান।
সফরে তিনি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন। এসময় সাতটি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে বলে আভাস দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
সঙ্কটের এই কালে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
এর বাইরে ব্যবসায়ীদের এক অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন ভারতের শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি।
এই সফর নিয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে মোমেন বলেন, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, জনযোগাযোগ, অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন, নদীর অববাহিকাভিত্তিক পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত সুরক্ষা, নিরাপত্তা সহযোগিতা, মাদক চোরাচালান ও মানবপাচার রোধ গুরুত্ব পাবে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায়।
মোমেন বলেন, “বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান সুসম্পর্ক গভীরতর হওয়াসহ সার্বিকভাবে এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবার লক্ষ্যে নতুন নতুন উদ্যোগ গৃহীত হবে।
“এই সফর বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি ও বিদ্যমান গতিশীল সম্পর্ককে আরও সুসংহত করবে বলে আশা করা যায়।”
কোভিড মহামারী, ইউক্রেইন যুদ্ধ এবং বিশ্বমন্দার প্রেক্ষাপটে এই সফর দু’দেশের পারস্পরিক সমঝোতা ও সাহায্যের মাধ্যমে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার ক্ষেত্র প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বা নীতি নির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছেন মোমেন।
দুই দেশের নির্বাচনের বছর খানেক আগে দুই প্রতিবেশী দেশের সরকার প্রধানের বৈঠকের দিকে সবার নজর থাকলেও অভ্যন্তরীণ বিষয় এমন সফরের আলোচনার বিষয়বস্তু হওয়ার সম্ভাবনাটি নাকচ করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
গুরুত্বপূর্ণ এই সফরের আগে ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বের কথাই তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
চীন-ভারত বৈরিতার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করে তিনি বলেছেন, “আমাদের পররাষ্ট্রনীতি খুব স্পষ্ট…‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’।
“যদি কোনো সমস্যা থেকে থাকে, তাহলে সেটা ভারত আর চীনের মধ্যে। আমি সেখানে নাক গলাতে চাই না।”
সোমবার সকালে নয়া দিল্লি পৌঁছার পর শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করবেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এরপর বিকালে নিজামউদ্দিন আউলিয়ার মাজারে যাবেন শেখ হাসিনা।
পরদিন ৬ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি ভবনে গার্ড অব অনারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর শেখ হাসিনা দিল্লির রাজঘাটে গান্ধী সমাধিস্থলে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
তারপর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন হায়দ্রাবাদ হাউজে হাসিনা-মোদীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় তাদের মধ্যে একান্ত বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর পর্যায়ের ওই বৈঠকেই বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকে সাতটি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক পানি ব্যবস্থাপনা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, রেলওয়ে, আইন, তথ্য ও সম্প্রচার, প্রভৃতি ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্পর্কিত।
অনুষ্ঠান শেষে দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করবেন।
ভারতের রাষ্ট্রপতি, উপ-রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও শেখ হাসিনার বৈঠকের কর্মসূচি রয়েছে।
এবারের সফরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যেসব ভারতীয় সেনাসদস্য শহীদ হয়েছেন বা আহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্টুডেন্ট স্কলারশিপ’ তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
তৃতীয় দিন ৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকা বাংলাদেশের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলও সেখানে থাকবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বিজনেস ইভেন্টের মাধ্যমে যেমন বাংলাদেশের ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের চিত্র ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কাছে তুলে ধরা যাবে, তেমনি ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করা সম্ভব হবে।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, রেলপথমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে থাকছেন।
সফর শেষে ৮ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরবেন শেখ হাসিনা।
করোনাভাইরাস মহামারীর আগে সর্বশেষ ২০১৯ সালে শেখ হাসিনা দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারত গিয়েছিলেন। বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত বছর ঢাকায় এসেছিলেন মোদী।
জ্বালানি সহযোগিতা
ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধের ধাক্কায় তেল সঙ্কটের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদে জ্বালানি সহযোগিতা নিয়ে সফরে আলোচনা হবে বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে সহযোগিতার বিষয়ে বিশদ আলোচনা সফরে হতে পারে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে অস্থির বিশ্বের জ্বালানি বাজার। রাশিয়া পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়লে বিশ্বের অনেক দেশের তেল পাওয়ার পথটি কঠিন হয়ে ওঠে।
নিষেধাজ্ঞার মুখে অন্য ক্রেতারা রুশ তেল কেনা থেকে পিছু হটলেও বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ তেল আমদানিকারক ও ভোক্তা দেশ ভারত সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে কম দামে রাশিয়া থেকে তেল কেনা শুরু করে। চীনও আবার রাশিয়া থেকে তেল কেনা বাড়িয়েছে বলে খবর এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
জ্বালানি তেল নিয়ে বাংলাদেশকেও সঙ্কটে পড়তে হয়েছে। তেলের দাম বাড়ানোর পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমাতে হয়েছে।
রাশিয়া তাদের তেল কিনতে বাংলাদেশকেও প্রস্তাব দিয়েছে, কিন্তু নানা জটিলতার কারণে সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনও নিতে পারেনি ঢাকা।
ভারত হয়ে রাশিয়ার তেল আনার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, “রাশিয়ান তেল নয়, ভারতের তেল আমরা নিতে পারি। এবং আমাদের বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর মধ্যে কানেক্টিভিটি পাইপলাইন করাও হয়েছে। তো, এটার আওতায় অনেক কিছু হতে পারে।
“অন্য কোনো তৃতীয় দেশের তেল ভারতের মাধ্যমে কেনার পরিকল্পনা এই মুহূর্তে নাই। তবে এনার্জি কোঅপারেশনের অনেক কিছু আলোচনা হতে পারে এবং সেটা সময়মত জানা যাবে।”
ভারতের সাথে বিদ্যুৎ জ্বালানি সহযোগিতার একটি ‘যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত’ বেশ কয়েক বছর আগেই হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন প্রতিমন্ত্রী।
পানি বণ্টন
তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি এক দশক ধরে ঝুলে থাকার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি চূড়ান্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
রোববার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “কুশিয়ারা নদীরটা নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় ফাইনালাইজড হবে। এটা আমাদের মঙ্গলের জন্য।”
গত মাসের শেষ সপ্তাহে দিল্লিতে যৌথ নদীর কমিশনের (জেআরসি) কুশিয়ারা নদীর পানি নিয়ে চুক্তির বিষয়বস্তু চূড়ান্ত করা হয়।
তবে তিস্তা চুক্তি নিয়ে জেআরসির বৈঠকে আগের মতো আশ্বাস দিয়েছে ভারত। তিস্তা চুক্তির নিয়ে অগ্রগতির বিষয় কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ারের কাছ থেকে।
এ বিষয়ে এক প্রশ্নে ভারতের সংবাদ মাধ্যম এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য দেখিয়ে দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমি আবারও ফার্মলি রিকুয়েস্ট করব, প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকারটা দেখার জন্য, উনি কিন্তু এই বিষয়টা পরিষ্কারভাবে বলেছেন।
“যে, এখানে আভ্যন্তরীণ সমস্যা আছে। কিন্তু তিনি আরও কিছু আশা করেন ভারতের কাছ থেকে। স্ট্র্যাটেজির কথা আমরা এত ওপেনলি বলব না। আমরা প্রত্যাশা করি, এটা হবেই। অবশ্যই প্রত্যাশা করি হবেই।”
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি ঝুলে আছে। আর কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন মোদীর দলের সঙ্গে মমতার দলের এখন দা-কুমড়া সম্পর্ক।
এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, “মাঝে মধ্যে আমাদের দেশের মানুষ, বিশেষ করে তিস্তা নদীর কারণে অনেক কষ্টে থাকে। আমরা দেখেছি, প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র মোদী) এর সমাধান করতে খুব আগ্রহী; কিন্তু সমস্যাটি ভারতের ভেতরে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা শুধু গঙ্গার পানির হিস্যা পাই; কিন্তু আমাদের আরও ৫৪টি অভিন্ন নদী আছে। এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা, এর সমাধান হওয়া দরকার।”
বাংলাদেশের মানুষের ভোগান্তি নিরসনে অভিন্ন নদীর পানির হিস্যা দিতে ভারতের আরও উদারতাও প্রত্যাশা করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
একান্ত বৈঠক ও জাতীয় নির্বাচন
শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে একান্ত বৈঠক হওয়া এবং দুদেশের পরবর্তী নির্বাচন আলোচনায় আসতে পারে কি না, সে বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানতে চান একজন সাংবাদিক।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানদের সফরগুলোতে প্রায় সবসময়ই একান্ত বৈঠক হয়ে থাকে।
“এবং ভারতের সাথে সবসময় একান্ত আলোচনা হয়। তো, আমরা আশা করছি এবারও একান্ত আলোচনা হবে। ওখানে কী আলোচনা করবেন, আমরা এখনও জানি না। ইলেকশন এখনও অনেক দিন বাকি, সুতরাং এখন আমরা চিন্তিত না।”
প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, “বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অন্য কোনো দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সাথে আলোচনার বিষয়বস্তু নয়।”
সফর সূচি
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট সোমবার সকাল ১০টায় ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছাড়বে।
ফ্লাইটটি দুপুর ১২টায় (বাংলাদেশ সময়) নয়া দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত থাকবেন ভারতের রেল ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী দর্শনা বিক্রম জারদোশ এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান।
বিমানবন্দরে শেখ হাসিনার জন্য থাকবে লাল গালিচা, একটি সাংস্কৃতিক দলের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে জানানো হবে অভ্যর্থনা।
সোমবার বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আসবেন জয়শঙ্কর। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রী যাবেন নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগায়। সেখান থেকে ফেরার পর বৈঠক করবেন আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানির সঙ্গে। পরে রাতে বাংলাদেশ হাই কমিশনে হাই কমিশনারের দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন তিনি।
মঙ্গলবার সকালেই ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে শেখ হাসিনা গান স্যালুট গ্রহণ করবেন এবং আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার পরিদর্শন করবেন।
এরপর রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করে শেখ হাসিনা যাবেন হায়দ্রাবাদ হাউজে। সেখানে মোদীর সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন তিনি। তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন। এরপর দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হবে। কর্মসূচি শেষে সেখানে মোদীর দেওয়া মধ্যাহ্ন ভোজে যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।
সেদিনই বিকালে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং উপ রাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে দেখা করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
বুধবার সকালে ভারতের উন্নয়নমন্ত্রী কিষাণ রেড্ডি দেখা করবেন শেখ হাসিনার সঙ্গে। এরপর বাংলাদেশ-ভারত ব্যবসায়ী ফোরামের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্টুডেন্ট স্কলারশিপ’ প্রধান অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
ঢাকা ফেরার আগে বৃহস্পতিবার বিমানে জয়পুর যাবেন শেখ হাসিনা; সেখান থেকে যাবেন আজমির শরিফ জিয়ারত করবেন।