অধীর অপেক্ষার অপেক্ষার পর শুরু হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা শ্রমিকদের ভিডিও কনফারেন্স। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলার দলই মাঠ থেকে সরাসরি সেই কনফারেন্সে চা শ্রমিকদের সাথে কথা বলছেন প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্যের প্রধানমন্ত্রী নিজের হাতের চুড়ি দেখিয়ে চা শ্রমিকদেরকে বলেন- ‘আপনাদের দেওয়া উপহার পরে আজকে বৈঠকে বসেছি।’
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে এই কনফারেন্সকে ঘিরে পাত্রখোলা চা বাগানের দলই মাঠে ছিলো সাজসাজ রব। কনফারেন্সে স্থানীয় ও জেলার আওয়ামী লীগ নেতাবৃন্দরাও যোগ দিয়েছেন। যোগ দিয়েছেন অন্যান্য চা বাগানের শ্রমিক-নেতারা।
ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ ভাষণের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং দেশের বিভিন্ন আন্দোলনে শহীদ চা শ্রমিকদের স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে উপহার দেয়ার জন্য চা শ্রমিকদের ধন্যবাদ জানান।
চা-শ্রমিকদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের ঐতিহ্যবাহী চা-শিল্পকে ধ্বংস হতে দেয়া যাবে না। চা-শিল্প যাতে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে। চা-শ্রমিকরা ভালোভাবে বাঁচলে এই শিল্প বাঁচবে। চা-শ্রমিকদের সবাইকে ঘর করে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
চলমান এই মতবিনিময়ে অংশ নিচ্ছেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার চণ্ডীছড়া চা-বাগানের খেলার মাঠ থেকে জেলার ২৪টি চা-বাগানের শ্রমিকরা। মৌলভীবাজার থেকে অংশ নিচ্ছেন ৯২টি চা-বাগানের শ্রমিকরা। এছাড়া সিলেট এবং চট্টগ্রাম থেকেও ভিডিও-বৈঠকে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকরা। মতবিনিময় উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোয় প্যান্ডেলসহ নানা ব্যবস্থা করা হয়েছে। অনুষ্ঠান নির্বিঘ্ন করতে জেলা প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্ব পালন করছেন।
দৈনিক মজুরি বাড়াতে চা-শ্রমিকদের প্রায় ২০ দিনের কর্মবিরতিতে দেশের চা-শিল্পে গভীর সংকট দেখা দেয়।
সংকট নিরসনে চা-বাগান মালিকদের সঙ্গে গত ২৭ আগস্ট বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন তিনি চা-শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১২০ থেকে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে দেন। সে সময় তিনি আরো জানান, চা-শ্রমিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তিনি। তার এ ঘোষণার পরদিন কাজে যোগ দেন চা-শ্রমিকরা।
প্রসঙ্গত, গত ৯ আগস্ট থেকে ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন চা-শ্রমিকরা। টানা কয়েক দিন ধরে চা-শ্রমিকদের সঙ্গে শ্রমিক নেতারা কথা বলে ও আশ্বাস দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। এছাড়া প্রশাসনের কর্মকর্তারাও নানা আশ্বাস দেন, কিন্তু কাজে ফেরেননি তারা। চা-শ্রমিকদের আন্দোলনের মাঝে চা-বাগান মালিকেরা ২৫ টাকা মজুরি বাড়িয়ে ১৪৫ টাকার প্রস্তাব করলেও রাজি হননি শ্রমিকরা।