লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের তিন গ্রামের কয়েক শত বিঘা ফসলি জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। ইউনিয়নের চরলক্ষি ও সিকদারকান্দি গ্রামের বিল পর্যন্ত পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খালটি মেম্বারের সহযোগিতায় মঙ্গলবার রাতে (১৪ নভেম্বর) ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করায় এ অবস্থা হয়।
এ নিয়ে গ্রামবাসী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও তহসিলদারে কাছে অভিযোগ করেও কোনো ফল পায়নি ভুক্তভোগী কৃষকরা। অবিলম্বে খালটি পুনঃখনন করা না হলে যেকোনো মুহূর্তে কৃষকদের সঙ্গে সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, উত্তর চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মোঃ স্বপনের সহযোগিতায় সিকদারকান্দি গ্রামের সাবেক বিএনপি নেতা মৃত মান্নার সরকারের বাড়ীর সামনে প্রভাবশালী জুয়েলের নতুন বাড়িতে যাওয়ার জন্য খালটির একাংশ ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করছেন। এতে পানি জমে ৫ গ্রামের কয়েক শত বিঘা জমি অনাবাদি হয়ে পড়লে ব্যবস্থা নেয়নি পরিষদ।
আরও পড়ুন— ইঁদুর তাড়ানোর অভিনব উপায়
সিকদারকান্দি গ্রামের আলাউদ্দিন ও রাসেল মিয়া অভিযোগ করেন, পানি নিষ্কাশনের একমাত্র খালটি দখলের পর রাস্তা নির্মাণ করায় সারা বছর কয়েক শত বিঘা জমিতে পানি জমে। এতে জমিগুলো অনাবাদি হয়ে পড়েছে। ‘আমাদের গ্রামসহ পাশের তিনটি গ্রামের মানুষের কয়েক শ বিঘা ফসলি জমি আছে এই বিলে। পানি জমে থাকার কারণে আমরা রবিশস্য বপন করতে পারিনি।’ এ অবস্থা চলতে থাকলে কৃষক পরিবারের সমস্যা হয়।
গ্রামের কৃষক জয়নাল, হাসেম আকন্দ ও সাত্তার মিয়ার অভিযোগ, মেম্বার স্বপন ও চেয়ারম্যানের কাছে কয়েকবার অভিযোগ দিলেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি। বরং উল্টো মেম্বার প্রভাবশালী জুয়েল মাঝির পক্ষে ওই খালে বালু দিয়ে ভরাট করে রাস্তা নির্মাণে সহযোগিতা করছেন। অন্যদিকে চরলক্ষি ও সিকদারকান্দি গ্রামের মাসুদ, কবির হোসেন ও আব্দুর রহিম অবিলম্বে খালটি পুনঃখননের দাবি জানান।
আরও পড়ুন— তফসিল নিয়ে বুধবার বিকেলে বৈঠকে বসছে ইসি
চরলক্ষি ও সিকদারকান্দি গ্রামের কয়েকজন কৃষক ও দিনমজুর বলেন, খালটির বেরিবাঁধ থেকে সিকদারকান্দি হয়ে চরলক্ষি গ্রাম পর্যন্ত দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করে খননের দাবি জানাচ্ছি।
তবে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ও বালু ব্যাবসায়ী মোঃ স্বপন এবং স্থানীয় প্রভাবশালী মোঃ জুয়েল সিকদার বলেন, ‘ শুধু আমরা না, আরো কয়েকজন প্রভাবশালী খালের আংশিক দখল করেছেন।’ আমরাও খালটি সংস্কার চাই।।
উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, চরলক্ষি গ্রামের সিকদারকান্দি এলাকায় রাতে খাল দখল করে বালু দিয়ে রাস্তা নির্মানে বিষয়ে আমি জানিনা। তবে দুই বছর আগে খাল দখল নিয়ে সমস্যা হয়েছিলো। ফসলি জমির পানি সময়মতো নিষ্কাশন না হওয়ায় কৃষকরা রবিশস্য বপন করতে পারেনি। এতে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খালটি পুনঃখননের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনিও।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অন্জন দাশ বলেন, ‘এ বিষয়ে চরলক্ষি গ্রামের কৃষকদের থেকে কেউ জানায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমিকে নির্দেশ দেওয়া হবে।’