গণমাধ্যমের ওপর ভিসা নীতির ব্যাখ্যা দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের ওপর ভিসা নীতি প্রয়োগের বিষয়ে সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনামকে লেখা এক চিঠিতে তিনি এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
তাকে চিঠি পাঠান সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম।
পিটার হাস বলেছেন, গণমাধ্যমকে কেউ মতামত প্রকাশ করা থেকে বিরত রাখার পদক্ষেপ নিলে তার ক্ষেত্রেও ভিসা নীতি প্রযোজ্য হবে।
আরও পড়ুন- ডেঙ্গুতে মৃত্যু হাজার ছুঁইছুঁই
দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের এক সাক্ষাৎকারে গণমাধ্যমের ভিসানীতির বিষয়ে ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি কার্যকর হবে গণমাধ্যম কর্মীদের ওপরেও’- গত ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এমন মন্তব্য করলে তৈরি হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া।
হাসের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে উদ্বেগ জানিয়ে সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ই-মেইলে একটি চিঠি পাঠান মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে।
চিঠিতে মাহ্ফুজ আনাম লেখেন, লেখা কিংবা সম্প্রচার করাই হল গণমাধ্যমের কাজ। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, একজন সাংবাদিক যা লেখেন বা সম্প্রচার করেন, তার ওপর ভিত্তি করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কি না? যদি তাই হয়, তাহলে এটি কি বাক্স্বাধীনতা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার আওতায় আসে না? গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে এটি কীভাবে ব্যবহার করা হবে? এখানে কোন বিষয়গুলো বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে?’
চিঠিতে পিটার হাসের বক্তব্য পরিষ্কার করার আহ্বান জানানো হয়।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত। চিঠির জবাবে তিনি লেখেন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের অধিকার দৃঢ়ভাবে রক্ষা করে মার্কিন সরকার।
আরও পড়ুন- বিএনপির আন্দোলন-আল্টিমেটাম সব ভুয়াঃ কাদের
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনকে উদ্ধৃত করে পিটার হাস তার চিঠিতে বলেন, সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন ২৪ মে ভিসা নীতি ঘোষণার সময় বলেছিলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যমসহ প্রত্যেকেরই। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় তাদের নিজ নিজ ভূমিকা পালনের অনুমতি দিতে হবে।
পিটার হাস বলেন, সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেনের বক্তব্য পরিষ্কার ছিল। ভিসা নীতি যেকোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, যিনি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার জন্য দায়ী বা জড়িত থাকবেন। এর মধ্যে তারাও অন্তর্ভুক্ত, যারা গণমাধ্যমকে মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখার ব্যবস্থা নেবেন।
সবশেষে মার্কিন রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, যুক্তরাষ্ট্র সংবাদপত্রের স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে। যারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করতে চান তাদের বিরুদ্ধেও দেশটি কথা বলবে এবং ভিসা নীতি প্রয়োগ করবে।