রাজধানীর শাহবাগ থানায় বরখাস্ত এডিসি হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের তিন কেন্দ্রীয় নেতাকে মারধরের ঘটনায় তদন্ত শেষ করতে আরও ৩ দিন সময় পেয়েছে পুলিশের তদন্ত কমিটি।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে তদন্ত শেষ করতে না পারায় প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয় বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘তদন্ত কমিটি ৭ দিনের সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করছিলো। তাদের আরও ৩ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।’
অবশ্য, গত সোমবার ডিএমপির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন তদন্ত কমিটির কাজ শেষ। মঙ্গলবারই তারা প্রতিবেদন জমা দেবেন।
তদন্ত কমিটি সূত্র জানায়, শাহবাগ থানায় বরখাস্ত এডিসি হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের তিন কেন্দ্রীয় নেতাকে মারধরের সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় হারুন ছাড়াও ৪ থেকে ৫ জন পুলিশ সদস্যের সম্পৃক্ততাও পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন- আবুধাবির টি-১০ লিগে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত নাসির হোসেন
গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈমকে শাহবাগ থানায় নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে ডিএমপির রমনা জোনের এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে।
ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ, ওইদিন রাতে এডিসি হারুন আরেক নারী পুলিশ কর্মকর্তা এডিসি সানজিদা আফরিনের সঙ্গে বারডেম হাসপাতালে আড্ডা দিচ্ছিলেন। ওই সময় সানজিদার স্বামী রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যান। তার সঙ্গে এডিসি হারুনের বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে এডিসি হারুন দুই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতাকে শাহবাগ থানায় তুলে নিয়ে যান। সেখানে তাদের নির্যাতন করা হয়।
এ ঘটনার পর এডিসি হারুনকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। আর শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশনস) গোলাম মোস্তফাকে বদলি করা হয়েছে ডিএমপির সংরক্ষণ দপ্তরে। ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়।
আরও পড়ুন- ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও ৭ মৃত্যু, হাসপাতালে ৩০২৭
সেই কমিটিকে সাত কার্যদিবসে তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছিলো। এই সময় ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল, শাহবাগ থানাসহ বেশ কিছু জায়গার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। বক্তব্য নেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতির এপিএস মামুন, এডিসি হারুন ও সানজিদার। নির্যাতনের শিকার ছাত্রলীগ নেতারাও সাক্ষ্য দিয়েছেন।
আলামত পর্যালোচনা করে তদন্ত কমিটি বলছে, স্ত্রী সানজিদা গিয়েছে জেনে ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে হাসপাতালে যান মামুন। সেখানে গিয়ে দেখা হয় এডিসি হারুনের সঙ্গে। পরে হাতাহাতিতে জড়ায় দু-পক্ষ। এক পর্যায়ে হারুন ও সানজিদা ঢুকে পড়ে হাসপাতালের ইটিটি রুমে। পরে শাহবাগ থানায় নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের মারধর করে হারুন ও তার সহযোগীরা।