আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোতায়েন করা হবে। সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে ডাকলে তারা কেন্দ্রে যাবে।
সোমবার (২৯ আগস্ট) নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার মোঃ আলমগীর।
আলমগীর আরও বলেন, জোরপূর্বক কেউ ভোট দিতে চাইলে প্রথমে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহায়তা নেবেন। তারা কুলিয়ে উঠতে না পারলে বিজিবি কিংবা সেনার সহায়তা নেবেন। আমাদের কন্ট্রোল রুম থাকে, সবার হাতে মোবাইল আছে, সাথে সাথে যোগাযোগ করবেন। বিজিবি যাবে, বিজিবি না পারলে সেনাকে ডাকবে। আশাকরি র্যাব, বিজিবি পারবে না এমন নয়। হয়তো লাখে একটা এমন ঘটনা ঘটতে পারে। সেটা হলে সে নির্বাচন বন্ধ থাকবে। পরবর্তী তারিখে আবার নির্বাচন হবে। বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েন দেশের অন্যান্য আইন কভার করে না। এক্ষেত্রে মৌলিক আইন পরিবর্তন করতে হবে। এছাড়া যিনি ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন, তার হাতে বিচারিক ক্ষমতা থাকে না। মূল কথা হলো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনী সহযোগিতা করবে। সেটাতে আমরা একমত হয়েছি। প্রতি কেন্দ্রে সেনা দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তাদের আকার অনেক বড় করতে হবে। তবে সরকারের প্রস্তাব থাকবে। আশাকরি সরকার সে সহযোগিতা করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মোঃ আলমগীর বলেন, কোনো দল নির্বাচনে আসা, না আসা গণতান্ত্রিক অধিকার। সেই অধিকার আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারবো না। তারা কী ধরণের সহযোগিতা চয় তা আমাদের কাছে এসে বলতে হবে। এবং এমন সহায়তা চাইবে যেটা নির্বাচন কমিশনের দেওয়ার ক্ষমতা আছে। এখন একটা দল যদি বলে আমাদের ফান্ড দিতে হবে, সেটা দেওয়ার ক্ষমতা তো আমাদের নেই। যারা আলোচনা করেছেন ইভিএমে নিয়ে, মতামত দিয়েছে তাদেরকেই আমরা আমলে নিয়েছি। বিএনপি তো আলোচনায় আসে নাই। আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি যে ইভিএমের পক্ষেই বেশি বলেছেন।
১৫০ আসনের ইভিএমে ভোট করার বিষয়ে তিনি বলেন, ইসি সচিবালয় বলেছে সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা। বর্তমানে যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বে অস্থিরতা আছে। এখন কতটুকু কেনা সম্ভব হবে সেটা বলতে পারছি না। আমরা বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরির কাছ থেকে ইভিএম নিই। তারাও তো নিজেরা তৈরি করে না, বিদেশে থেকে আনে। সচিবালয় বলেছে আগামী তিন মাসের মধ্যে তারা প্রজেক্ট করতে পারবে। পরবর্তীতে ক্রয় ও প্রশিক্ষণে তারা যেতে পারবে বলে মনে করছে। যদি বিদেশ থেকে আনতে এবং ফান্ড নিয়ে কোনো সমস্যা না হয় তাহলে ১৫০ আসনে সম্ভব।
ইভিএমে কারচুপি নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি আরও বলেন, যে বলছে তাকে প্রমাণ দিতে হবে। উনি যদি আমাদের কাছে এসে দেখতে চান, জানতে চান, আমার উত্তর দেবো। উনি যদি প্রমাণ দিতে পারেন, তাহলে বাতিল করে দেবো। ওই বাইরে কে কী বলবো, তা দেখে তো আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। ১৮ কোটি মানুষ যদি বলে আমরা কোনটা করবো। তবে আমাদের কাছে এসে যদি বলে যে প্রমাণ করতে পারে যে ইভিএমে কারচুপি করা যায়, তা প্রমাণ করে দিয়ে গেলাম, তাহলে ইভিএমে ভোট হবে না।
জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) পাশাপাশি নিজস্ব কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের বিষয়ে এই কমিশনার বলেন, অতীতে নির্বাচন করে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন, এছাড়া প্রশিক্ষণ রয়েছে, এতে আমরা কতজনকে প্রস্তুত করতে পারবো তার উপর নির্ভর করবে রিটার্নিং কর্মকর্তা পদে নিজস্ব কর্মকর্তা কতজনকে নিয়োগ করা হবে। এক্ষেত্রে এক জেলায় ডিসি অন্য জেলায় আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বা সিনিয়র জেলা কর্মকর্তাকে নিয়োগ করা হতে পারে। আবার এক জেলার তিনটি আসনে ডিসি, দু’টিতে আমাদের কর্মকর্তা এভাবেও হতে পারে।