গাইবান্ধা শহরের গাইবান্ধা ক্লিনিক নামে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারের সময় প্রসূতির পেটে গজ রেখেই অপারেশন করার অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। বর্তমানে ওই প্রসূতি রংপুরে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পেটে গজ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে প্রসূতির পরিবারের পক্ষ থেকে সিভিল সার্জন এর কাছে অভিযোগ করা হলে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
শনিবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আব্দুল্লাহেল মাফী। ঘটনা তদন্তে বৃহস্পতিবার একজন নারী কনসালটেন্টকে প্রধান করে এই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এর আগে ২৩ জুলাই রুমি বেগম নামে ওই প্রসূতির সিজার করেন শহরের গাইবান্ধা ক্লিনিকের পরিচালক ডাঃ একরাম হোসেন। ভুক্তভোগী রুমি বেগম গাইবান্ধা সদর উপজেলার পৌর শহরের পশ্চিম গোবিন্দপুর গ্রামের মোঃ মেজবাহুল হকের স্ত্রী।
আরও পড়ুন- রামগঞ্জ প্রেস ক্লাবের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
সিভিল সার্জন ও থানা পুলিশের কাছে করা অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত (২৩ জুলাই) গাইবান্ধা ক্লিনিকের স্বত্বাধীকারী ডাঃ মোঃ একরাম হোসেন ভুক্তভোগী রুমি বেগম নামে এক গৃহবধূর সিজারিয়ান অপারেশন করেন। তারপর পাঁচ দিনের মাথায় নানা জটিলতা শুরু হয় ঐ গৃহবধূর। এক পর্যায়ে তার অবস্থা খারাপ হলে গাইবান্ধা ক্লিনিকের সেই ডাক্তারের কাছেই নেন তার পরিবার। অবস্থার বেগতিক দেখে ভর্তি করে অপারেশন থিয়েটারে নেন। অপারেশনের পর বের করে একটি কেবিনে ভর্তি করিয়ে রাখেন। রোগীর অবস্থা অবনতি হলে পরিবার ও পুলিশের তোপের মুখে গৃহবধূকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর রেফার্ড করা হয়।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) রংপুরের বেসরকারি নাজমা ক্লিনিকে অপারেশনের মাধ্যমে গৃহবধূর পেট থেকে ময়লা ও পচা অংশ অপসারণ করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রোগী এখনো শংকামুক্ত নয়।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডাঃ মোঃ একরাম হোসেন বলেন, ‘তৃতীয় সিজার হওয়ার কারণে রুমি বেগমের অপারেশনটি জটিল ছিল। সিজারের পর তার সমস্যার বিষয়টি জানার পর আমরা তার চিকিৎসা করতে চেয়েছি। কিন্তু তার স্বামী আমার এখানে চিকিৎসা করাতে রাজি না হওয়ায় আমি তাকে রংপুর উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করেছি। তারপর রোগীর স্বজনরা আমার সঙ্গে আর যোগাযোগ করেননি।’
এ বিষয়ে গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আব্দুল্লাহেল মাফী জানান, এ বিষয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, এ ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে।