শরীয়তপুর নবাগত পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভাকালে বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা এবং সভ্যতার মধ্যে অনেক গ্যাপ আছে। আমরা নিজেরা নিজেদের-টা দেখতে পারি না। সাংবাদিকদের মাধ্যমে কিন্তু স্বাভাবিক মানুষ সমাজটাকে দেখে। সুতরাং পুলিশের যেমন দায়বদ্ধতা আছে। আপনাদের দায়বদ্ধতা আরো-বেশী। এটাও কিন্তু আপনাদের মাথায় রাখতে হবে।’
সোমবার (২৪ জুলাই) বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সভাকক্ষে শরীয়তপুর নবাগত পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় একথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সব গুলো বিষয় নোট করেছি। দূর্ঘটনার জন্য বড় লজ্জার বিষয়টি হলো, আমরা কখনো গতি মেনে চলি না। এর চেয়ে বড় কষ্টের আর কিচ্ছু নাই। আমি দেখেছি, সব শ্রেণীর মানুষ-শিক্ষিত, অশিক্ষিত, মধ্য শিক্ষিত, উচ্চ-শিক্ষিত সবাই। শুধু আমার গাড়িটা ৮০ থেকে ৯০’র মধ্যে চলে। আর কারো গাড়ি দেখি নেই।’
আরও পড়ুন- বাংলাদেশ থেকে আরো জনবল নিয়োগে আগ্রহী ইতালি
হাই-ওয়ে এক্সপ্রেস গতিসীমা সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার থাকার প্রসংগে তিনি বলেন, ‘আমি ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে কথা বলেছি। তারা বলেছে, ১০০ কি.মি. পর্যন্ত গতিতে গাড়ি চালাতে পারে। কিন্তু সব সময় তারা (ইঞ্জিনিয়াররা) ২০ কিলোমিটার নিচে রাখে। কারণ তারা জানেন মানুষ তারপরেও ১০/২০ কি.মি. বেশী গতিতে গাড়ির গতি উঠাতে পারে। কিন্তু ১০০’র উপরে গাড়ি উঠলেই আপনি মনে করবেন আপনি ঝুঁকির মধ্যে আছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা এবং সভ্যতার মধ্যে অনেক গ্যাপ আছে। আমরা নিজেরা নিজেদের-টা দেখতে পারি না। সাংবাদিকদের মাধ্যমে কিন্তু স্বাভাবিক মানুষ সমাজটাকে দেখে। সুতরাং পুলিশের যেমন দায়বদ্ধতা আছে। আপনাদের (সাংবাদিকদের) দায়বদ্ধতা আরো বেশী। এটাও কিন্তু আপনাদের মাথায় রাখতে হবে। সব কিছু যদি পুলিশ সুপার করতে পারতো, তাহলে এতো বড় কমিউনিটি দরকার ছিলো না। পুলিশ সুপারই যদি সব কিছু করতে পারতো! তাহলে বিভিন্ন ধরনের সংগঠন, সমিতি দরকার ছিলো না। সুতরাং শুধু পুলিশ সুপার নয়, আপনাদেরও কন্ট্রাক্টরি করার দরকার আছে। আশা করি সেই জায়াগটি প্রসারিত হবে। সেই জায়গাটিতে কাজ করবো। আমি সত্যিকার অর্থে আপনাদের সেবা দিতে এসেছি। এদেশের সংবিধানকে সমুন্নত রেখে, প্রজাতন্ত্রের প্রয়োজনে আমি, আপনাদের সেবা দিয়ে যাবো। এবং যে ম্যানডেট আইন আমাকে দিয়েছে, আইনের ভেতর থেকে তা আমি করবো।
তিনি এর আগে ঢাকা জেলার সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে ও সিলেট জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে এবং হাইওয়ে পুলিশ সুপার মাদারীপুর অঞ্চলের দায়িত্ব পালন করেছে।
আরও পড়ুন- শরীয়তপুর পৌরসভায় বাজেট পেশ
এসময় উপস্থিত জেলার অধিকাংশ সাংবাদিক এবং উপজেলা থেকে আসা সাংবাদিকগণ নবাগত পুলিশ সুপারকে তাদের পরিচয় দেন সেই সাথে, শরীয়তপুর বাসীর পক্ষ থেকে পুলিশ সুপারকে অভিনন্দন জানান।
একই সাথে জেলার থানা গুলোতে বেআইনি সালিশ-দরবার এর সেন্ডিকেট, মাদক, সড়ক দুর্ঘটনা, বেপরোয়া হুন্ডা, ইজিবাইক, প্রেস গাড়িতে লাগিয়ে ঘোরার বিষয়ে নজর দেয়ার দাবী করেন সাংবাদকর্মীরা। এবং বিভিন্ন স্পটে চুরি, ডাকাতির বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশের নজরদারি বাড়াতে বলেন।
এছাড়াও সাংবাদিকরা পেশাগত সময় মোবাইল করলে পুলিশ সুপার সহ প্রত্যেক পুলিশ কর্মকর্তা যাতে ফোন রেসপন্স করেন, এবিষয়ে অনুরোধ করেন তারা।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোঃ বদিউজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) তানভীর হায়দারসহ জেলা পুলিশের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ।