হিজরি বা আরবি সন ১৪৪৫ আজ বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই ঈসায়ী মতান্তরে ৫ই শ্রাবণ ১৪৩০ বাংলা) শুরু হয়েছে। বিভিন্ন কারণে হিজরি সনের হিসাব রাখা মুসলমানদের কর্তব্য। একাধিক আবশ্যিক ইবাদত চাঁদের হিসাবের সাথে সম্পৃক্ত। তাই একদল মুসলমানকে সব সময় চাঁদের হিসাবের দিন-তারিখ আবশ্যিকভাবে গুনে রাখতে হবে। হিসাবটি কেউ না রাখলে সবাই নিশ্চিত গুনাহগার হবে।
হিজরি সন বা আরবি বর্ষ শুরু ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর রাঃ-এর আমলে। এর প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বলা হয়, বসরার গভর্নর আবু মুসা আশআরি রাঃ ওমরের কাছে এক পত্রে লেখেন, ‘হে আমিরুল মুমিনিন, আমাদের কাছে বহু পত্র আসে, যাতে তারিখ লেখা থাকে শাবান। কিন্তু তা চলমান বছরের, নাকি অতীতের—আমরা বুঝতে পারি না।’ তারপর ওমর রাঃ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেন। (ইবনুল আসির, আল-কামিল ফিত-তারিখঃ ১ /৮)
আরও পড়ুন- বেনাপোল ৩০ পিস স্বর্ণের বার উদ্ধার
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত, যখন ওমর রাঃ সন প্রবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন, তখন তিনি পরামর্শ সভার আহ্বান করেন। সভায় সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস রাঃ নবী সাঃ-এর ইন্তেকালের বছর, তালহা রাঃ নবুয়তের বছর, আলি রাঃ হিজরতের বছর থেকে বর্ষ গণনার প্রস্তাব দেন। তারপর সবাই আলি রাঃ-এর প্রস্তাবে ঐকমত্য পোষণ করেন। (আল-আইনি, উমদাতুল কারিঃ ১৭ / ৬৬)
প্রশ্ন জাগে, নবী সাঃ হিজরত করেছিলেন রবিউল আউয়াল মাসে, তাহলে বছরের প্রথম মাস মুহাররম হলো কিভাবে? এর উত্তরে বলা হয়, নবী সাঃ-এর হিজরত ২৭ সফর থেকে শুরু করে ১২ রবিউল আউয়াল অবধি সম্পন্ন হয়েছিল। বর্ষ গণনার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় হিজরতের ১৬ বছর পর ১৭তম বছরের ১০ জমাদিউল আউয়াল মাসে। মাস হিসেবে রবিউল আউয়াল কিংবা জমাদিউল আউয়াল কোনোটি থেকেই বর্ষ গণনা শুরু করা হয়নি। কারণ সমকালীন আরবে মুহাররমই ছিল প্রথম মাস এবং হজের পর প্রথম বছর। পরিস্থিতি বিবেচনায় এবং শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সেই হিসাবটি অপরিবর্তিত রাখা হয়। (আল-বিদায়া ওয়ান- নিহায়া ৪ / ৫১৭)
