কুড়িগ্রামের উলিপুরে ৫০ বছর যাবৎ যুগিচুন বেঁচে জীবিকা নির্বাহ করছেন দেবনাথ পরিবারের লোকজন। প্রতিদিন যুগিচুন তৈরিতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন উক্ত পরিবার গুলো। তারা বলেন বর্তমান কঠিন সময় পার করতে হচ্ছে। কারন আগের মত ব্যাবসা ভালো নেই।
সরেজমিন উপজেলার পৌরসভাধীন রামদাস ধনিরাম যুগিপাড়া গ্রামের প্রায় ১৮ টি পরিবার যুগিচুন তৈরি করে বাজারে বাজারে কিংবা গ্রামে গ্রামে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। তারা পরিবারের নারী পুরুষ মিলে যুগিচুন তৈরি করতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন। তারা বলেন আমরা দেবনাথ পরিবার যারা আছি আমাদের যুগি চুন তৈরি করা ছাড়া আর কোন আয়ের পথ নেই। আমরা বিভিন্ন এলাকা থেকে ঝিনুক সংগ্রহ করে তা ক্রয় করে নিয়ে এসে পরিবারের সকল সদস্য মিলে চুন তৈরি করে তা বাজারে বিক্রি করে কোনরকম ভাবে সাংসার চালিয়ে আসছি। ঝিনুক সংগ্রহ করা এলাকা গুলোর মধ্যে রায় গঞ্জ, ভুরুঙ্গামারি, কচাকাটা, পীরগঞ্জ সহ আরও অনেক এলাকা থেকে ক্রয় করে নিয়ে আসেন বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীপুরে কাটা তাঁরের বেড়ায় ৬ বছর অবরুদ্ধ একটি পরিবার
কৃষ্ণ পদক দেবনাথ বলেন, ঝিনুক কেজি প্রতি ক্রয় করেন প্রায় ১২ টাকা দরে। কেজি প্রতি ঝিনুকে চুন তৈরি হয় প্রায় ১ কেজি থেকে ১.৫ কেজি। কেজি প্রতি চুন বাজারে বিক্রি হয় প্রায় ২৫ থেকে ৩০ টাকা। কেজি প্রতি ঝিনুকে লাভ হয় প্রায় ১৩ থেকে ১৮ টাকা। এভাবে প্রতিদিন বাজারে যুগি চুন বিক্রি করেন প্রায় ৫০ কেজি। যার মুল্য হয় ১২ শ ৫০ টাকা থেকে ১৫ শ ৫০ টাকা। দিনে লাভ হয় ৬শ ৫০ টাকা থেকে ৯শ টাকা পর্যন্ত। কোনরকম ভাবে চলে তাদের সংসার বলে জানান তিনি।
এছাড়াও উক্ত এলাকার যুগিচুন তৈরি করার দেবনাথ পরিবারের মধ্যে তারাপদ দেবনাথ, পাকরু দেবনাথ, ননী দেবনাথ, খাকসু দেবনাথ, রবি দেবনাথ, সুবাস ও রবি দেবনাথ সহ আরও অনেক দেবনাথ পরিবারের লোকজন বলেন, আমাদের আয়ের এক মাত্র পথ যুগি চুন। ঝিনুক বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রয় করে নিয়ে এসে তা চুন তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে যা টাকা আয় হয় তা দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। তারা বলেন আমাদের বাপ দাদারা এ ব্যাবসা করে আসছেন আমরাও এ ব্যাবসা বছরের পর বছর পরিচালনা করে আসতেছি। তবে সংসার পরিচালনা করতে অনেক হিমশিম খেতে হয়। কারণ বর্তমান নিত্যপণ্যের দাম অনেক বাড়তি থাকায় যা আয় হয় তা আর হাতে রাখতে পারিনা বলে জানান তারা।
উক্ত এলাকার পৌরসভার আওয়ামিলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান নবাব বলেন, আমি অনেক বছর থেকে দেখে আসছি দেবনাথ পরিবারের লোকজন যুগিচুন তৈরি করে তা বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। তাদের এক মাত্র আয়ের পথ হল যুগি চুন। তিনি বলেন যদি সরকারি ভাবে তাদের বিভিন্নভাবে আর্থিক সাহায্য করা সম্ভব হত তাহলে তাদের জীবিকা নির্বাহ করা অনেক ভালো হত বলে জানান তিনি।”