শান্তিপূর্ণভাবে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘আমরা দেখেছি এবার গাইবান্ধার ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে। আমরা যতটুকু খোঁজখবর নিয়েছি, তাতে কেনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।’
আলোচিত সংসদীয় গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে ভোটগ্রহণ শেষে আজ বুধবার (৪ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ৪টার পর ঢাকার নিজ কার্যালয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এসব কথা বলেন।
কত শতাংশ ভোট পড়েছে জানতে চাইলে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে প্রায় ৩৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। ইভিএম নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই, ভোট সুষ্ঠু হয়েছে।’
আরও পড়ুন- রাত পোহালেই গাইবান্ধা-৫ আসনের ভোট
আজ সকাল সাড়ে আটটা থেকে ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রে এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বিকেল সাড়ে ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।
গত ২৩ জুলাইয়ে সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। গত ১২ অক্টোবর এই আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অনিয়মের কারণে ভোট বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এরপর অনিয়ম ও দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ মেলায় রিটার্নিং কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশের পাঁচ উপপরিদর্শক (এসআই) ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাসহ ১৩৪ জনের বিরুদ্ধে বরখাস্তসহ নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ আইন অনুসারে বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তির সুপারিশ করে ইসি, যা বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। পরে গত ৬ ডিসেম্বর এই আসনের উপনির্বাচনের পুনঃভোটের জন্য ৪ জানুয়ারি ধার্য করে নির্বাচন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটি। সে অনুযায়ী আজ সকালে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
এই উপনির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন—আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন, জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু, বিকল্পধারা মনোনীত জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্রপ্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাত এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। যদিও, গত ২৫ ডিসেম্বর আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ বগুড়ায় এক সংবাদ সম্মেলন করে ভোট কারচুপির আশঙ্কায় এই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন- জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতাঃ র্যাব ডিজি
এ উপনির্বাচনে ১৪৫টি কেন্দ্রের ৯৫২টি বুথে ইভিএম ভোটগ্রহণ করার জন্য ১৪৫ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ৯৫২ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও এক হাজার ৯০৪ জন পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, মোট ভোটার তিন লাখ ৩৯ হাজার ৯৮ জন। নিরাপত্তার জন্য প্রতি কেন্দ্রে দুজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ চারজন পুলিশ সদস্য এবং ১২ জন আনছার ও ভিডিপি দায়িত্ব পালন করছেন। তবে, ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলের ১০টি কেন্দ্রে ১০ করে পুলিশ সদস্য ও ১৬ জন করে আনছার ও ভিডিপি দায়িত্ব পালন করেন। একইভাবে সাঘাটা উপজেলার চরাঞ্চলের তিনটি কেন্দ্রেও ১০ জন করে পুলিশ সদস্য ও ১৬ জন করে আনছার ও ভিডিপি দায়িত্ব পালন করেন।
ইসি জানিয়েছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য র্যাবের ৯টি টিম, চার প্লাটুন বিজিবি ও অস্ত্রধারী আনসার সদস্য ছাড়াও এক হাজার ২৮৫ জন পুলিশ নিরাপত্তা প্রদানে দায়িত্ব পালন করছেন।