ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড ভূয়ারকান্দি দাখিল মাদ্রাসা সড়কে কুমার নদীর উপর আ’রসিসি গার্ডার ব্রীজ ওঠার সংযোগ সড়কটি বৃষ্টিতে ধসে এখন মৃত্যু কূপের পরিণত হয়েছে। ব্রীজের সুফল এর জায়গায় কূফল ভোগ করছেন এলাকাবাসী। ব্রীজটি ব্যবহার হচ্ছে এখন ধান, পাট ও মরিচ শুকানোর কাজে।
১৮ সেপ্টেম্বর রবিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমন দৃশ্য। জানা যায়, ব্রীজটি ৩ কোটি ১০ লক্ষ তিয়াত্তর হাজার ১৮৯ টাকায় বাস্তবায়ন করেন ফরিদপুর এলজিইডি। এটি নির্মাণ করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আজম কনস্ট্রাকশন।
আরও পড়ুন- “শীর্ষ সংবাদে” খবর প্রকাশে ফরিদপুরের সেই ব্রীজের মেরামত কাজ শুরু
ব্রীজ সংলগ্ন ভূয়ায়ারকান্দি গ্রামের কিশোর সিজান বলেন, একদিন রাতের বেলা মোটরসাইকেল নিয়ে ব্রীজ পাড় হতে গিয়ে নারী ও পুরুষ দুই আরহী মারাত্বক দূর্ঘটনার শিকর হন। তাদের চিৎকার শুনে সবাই এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এই ব্রীজটি নির্মাণের পরপরই ব্রীজের গোড়া থেকে সংযোগ সড়কটি ধসে গেছে।
ব্রীজের উপর ধান রোদে দিয়েছে ফিরোজ বেগম তিনি শীর্ষ সংবাদকে বলেন, এই ব্রীজের গোড়া থেকে রাস্তা ধসে গিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তাই আমরা ফসল শুকানোর কাজে ব্যবহার করছি।
আরও পড়ুন- খাদ্যে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ নাঃ কৃষিমন্ত্রী
নরসিংদিয়া গ্রামের যুবক বিল্লাল কবিরাজ শীর্ষ সংবাদকে বলেন, “সরকার প্রায় সোয়া ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রীজটা করা হয়েছে। এখন এটা ব্রীজটি মরণ ফাঁদ তৈরি হয়েছে। কিছু দিন না যেতেই এটা ভেংগে চূরে নামছে। এটা ৩০/৪০ হাত গভীর। এখন থেকে একটা ভ্যান পরলে ৩০/৪০ হাত গভীরে পরে যাবে। এখানে একটা দাখিল মাদ্রাসা সহ স্কুল রয়েছে। এই শিক্ষার্থীরা যদি চলাচল করতে গিয়ে দূর্ঘটনার শিকার হয় এই দায়ভার কে নিবে? এই দেখেন এটা ২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময় শেষ হইছে। হওয়ার পরপরই ভেংগেচূড়ে পরে গেছে। আপনাদের মাধ্যমে কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। যাতে করে এটা দ্রুত সংস্কার করা হয়।”
ভূয়ারকান্দি দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক তাইফুর রহমান মজনু শীর্ষ সংবাদকে বলেন, “এই ব্রীজটা শুধু ভূয়ারকান্দি দাখিল মাদ্রাসা আর নরসিংহ দিয়া গ্রামের সাথেই শুধু সংযোগস্থল না। পরমানন্দপুর,সদরদি,গোপালোদি গ্রামেরও সংযোগ স্থল এটা। এই ব্রীজের সংযোগ সড়কটি ভেংগে পরার কারণে শুধু মাদ্রাসা শিক্ষার্থী না,এই ভূয়ারকান্দি গ্রামের অনেক কৃষকের জমি নরসিংদিয়া গ্রামে রয়েছে। কৃষকদের কৃষি ফসল কেঁটে এই গ্রামে আনতে চরম দূর্বিষহ অবস্থা। কৃষকরা ফসল আনতে পারছে না। শিক্ষার্থীরাও ভ্যানে করে আসতে পারছে না। নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় সাঁকো দিতে পারছিনা। এই ব্রীজটা হওয়াতে আমরা সুফল পাবো ভেবেছিলাম। এখন দেখি বিফল হয়ে গেছে। যাতে করে ওপারে দেবে যাওয়া অংশটি পুনরায় নির্মাণ করে এই আশাবাদ ব্যাক্ত করি।”
মাদ্রাসা সুপার আবুল হোসেন বিশ্বাস শীর্ষ সংবাদকে বলেন, “আমাদের মাদ্রাসার পাশে কুমার নদীর উপর দাখিল মাদ্রাসা সড়কে ব্রীজটির একপাশে সংযোগ সড়ক ভেংগে পেরেছে। দুই বছর হলো ব্রীজটি নির্মাণ হয়েছে। সংযোগ সড়কটি ধসে পরায় আমাদের মাদ্রাসার অনেক শিক্ষার্থী দূরদূরান্ত থেকে আসতে পারছে না। কোন মতে ঝুঁকি নিয়ে সরু একটু জায়গা দিয়ে অনেক শিক্ষার্থীরা সাইকেল নিয়ে আসা যাওয়া করে। আমাদের মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের স্বার্থে যদি ব্রীজটার সংযোগ সড়ক পুনঃনির্মাণ করা হতো তাহলে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী আসতে পারতো। এবং এলাকার মানুষও সুফল পেত।”
এবিষয়ে ফরিদপুর এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী এম. ফারুক হোসেনকে জানানো হলে তিনি শীর্ষ সংবাদকে বলেন, “আমি বিষয়টি নোট করে রাখছি। আমি দেখছি।”