ইসলামের প্রচার-প্রসারের লক্ষ্যে বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ২২ মার্চ এক অধ্যাদেশবলে ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন। ২৮ মার্চ ১৯৭৫ সালে ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ্যাক্ট’ প্রণীত হয়।-ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ প্রকল্প। সারা দেশের ন্যায় লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে যথাসময়ে কার্যক্রম করছেন শিক্ষকগন (মসজিদের ইমাম)। বর্তমানে উর্দ্ধগতির বাজারে পাঁচ মাসের বেতন-ভাতা না পেয়ে এসব শিক্ষকরা তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহার অর্ধাহারে দিন কাটছে। দুটি ঈদ বোনাস, বেতন-ভাতা দেয়াসহ তাদের চাকুরি জাতীয় করনের দাবি জানান। সোমবার (৫ আগষ্ট) দুপুরে জেলা কার্যালয়ে এপ্রতিবেদকের কাছে সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কয়েক ফিল্ড সুপারভাইজার ও শিক্ষক।
সূত্র জানায়, আর্থ সামাজিক উন্নয়নমূলক কার্যক্রম ও শিক্ষা বিস্তারের কাজে মসজিদের ইমামদের নিয়ে সরকার ১৯৯৩ সালে মসজিদ ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় প্রাক-প্রাথমিক এবং ঝরেপড়া (ড্রপ-আউট) কিশোর-কিশোরী ও অক্ষরজ্ঞানহীন বয়স্কদের জন্য মসজিদভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। এপ্রকল্পে মসজিদকেন্দ্রে শিশু ও বয়স্ক শিক্ষার্থীদেরকে বাংলা, অংক, ইংরেজি, আরবি, নৈতিকতা ও মূল্যবোধসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দান করা হয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুবিধাবঞ্চিত স্থানে এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তার ও র্কোস সম্পন্নকারীদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হচ্ছে। সুবিধাভোগী অধিকাংশই সমাজের অবহেলিত, দরিদ্র ও নিরক্ষর জনগোষ্ঠি। প্রতিটি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০ জন, সহজ কুরআন শিক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫ জন ও বয়স্ক শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫ জন।
জেলার উপ-পরিচালক মুহাম্মদ জাকের হোসেন শীর্ষ সংবাদকে বলেন, প্রকল্পটি সরকারের বিশেষ বিবেচনায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। ৭ম পর্যায়ের প্রকল্পে প্রধান কার্যালয়সহ জেলা ও উপজেলা শিক্ষাকেন্দ্র, রিসোর্স সেন্টারের কাযর্ক্রম চলমান। জননন্দিত এই বৃহৎ প্রকল্পের আওতায় জেলা, উপজেলা, থানা ও জোনে চলমান। ৩২ হাজার প্রাক-প্রাথমিক, ৪১ হাজার কুরআন শিক্ষা এবং ৭৬৮টি বয়স্ক কেন্দ্রেসহ মোট ৭৩ হাজার ৭৬৮টি শিক্ষা কেন্দ্রের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত থাকলেও ৭ম বারের মতো চালু রয়েছে। সকল কেন্দ্র চালু রাখাসহ প্রকল্পের আওতায় নিয়োজিত জনবলের বেতন, সম্মানী ও ভাতা পরিশোধও করা হচ্ছে। প্রকল্পের সঙ্গে পাবলিক সেন্টিমেন্ট বা জনগণের অনুভূতি জড়িত। ইচ্ছা করলেই প্রকল্প বন্ধ করা যাবে না। বর্তমানে শিক্ষকরা মাসে ৫ হাজার টাকা বেতন দেয়া হচ্ছে এবং প্রকল্পটি রাজস্ব আওতায় আনার পরিকল্পনাও রয়েছে ।
রায়পুর ইমাম সমিতির সভাপতি ও আলিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা নিজাম উদ্দিন শীর্ষ সংবাদকে বলেন, অভিভাবকদের অবহেলার কারণে মসজিদের ইমাম সাহেবরা এখন মক্তবে কোরআন পড়ানোর আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে। যার কারণে শিশু-কিশোররা কোরআন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরা সকালে ঘুম থেকে উঠলেই স্কুল, কোচিং অথবা কিন্ডার গার্টেনে ক্লাসের সময় হয়ে যায়। এ ক্ষেত্রে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রশংসার দাবি রাখে।
সুপারভাইজার ও শিক্ষকরা বলেন, বেতন ভাতা না পেয়ে লক্ষ্মীপুরে ৭৪৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা চরম হতাশায় ভুগছেন। প্রকল্পে শিক্ষকরা চাকরির পাশাপাশি করোনা কালিন সময়ে মৃত ব্যক্তির কাপন দাপন এবং সরকারের বিভিন্ন কাজে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছেন।। ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠা হলেও আজও জাতীয় করন হয়নি বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয় করন হয়েছে। দুর্ভাগ্য জাতির পিতার প্রতিষ্ঠান হয়ে আজ জাতীয়করন হচ্ছে না। ইসলামের খেদমতে বঙ্গবন্ধুর অবদান প্রসার এবং সারাদেশে কোমলমতি শিশুদেও ইসলামী নৈতিক ও কোরআনী শিক্ষা দানের লক্ষে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্প শুরু হয়।
রায়পুরের ফিল্ড সুপারভাইজার মোহাম্মদ সামছুল ইসলাম শীর্ষ সংবাদকে বলেন, করোনা মহামারিতে এসব অসহায় শিক্ষকরা কারো কাছে হাত পাততেও পারেননি। ধার দেনা করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রি কিনতে হিমশিম খাচ্ছে ইফার শিক্ষকরা। অনাহারি সন্তান-বৃদ্ধ মা বাবার আহারযোগাতেহিমসিম হচ্ছে।
প্রতিবেদক
ঢাকা
সর্বমোট নিউজ: 715
বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বে-আইনি।