বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমার সেনা বাহিনীর ছোড়া মর্টারশেলে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত ও পাঁচ রোহিঙ্গা নাগরিক আহত হওয়ার ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মোকে তলব করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। রোববার মন্ত্রণালয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদ জানাবে ঢাকা।
এদিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মর্টারশেল নিক্ষেপ ও হতাহতের ঘটনায় মিয়ানমারকে কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে জাতিসংঘে অভিযোগ জানানো হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার কোনো সময়েই কথা দিয়ে কথা রাখে না। আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমরা চাই, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী প্রায় ১২ লাখ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এগুলো যত দ্রুত শান্তিপূর্ণভাবে প্রত্যাবাসন হয় সে বিষয়ে কাজ করছি। আমরা লক্ষ্য করছি, মিয়ানমারে শুধু রোহিঙ্গা নয়, তাদের বহু ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর’ সঙ্গে তাদের যুদ্ধ চলছে। জানতে পেরেছি, আরাকান আর্মি নামে একটা গোষ্ঠী যুদ্ধ করছে। কখনও তাদের সঙ্গে ভালো, আবার দেখি যুদ্ধ। ভেতরে কী রহস্য তারাই জানে।
আরও পড়ুন- মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে পা উড়ে গেছে বাংলাদেশী যুবকের
তিনি আরও বলেন, আমাদের সীমান্তে যে গোলাবারুদ পড়ছে, সেজন্য কড়াভাষায় তাদের প্রতিবাদ জানিয়েছি। বিজিবি মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ বা বিজিপির সঙ্গে প্রতিনিয়ত কথা বলছে। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে এনে আমাদের অবস্থানের কথা জানানো হয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী কখনও যুদ্ধ চান না। আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবে বিষয়টি সমাধান হোক।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সংযত থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে: প্রধানমন্ত্রী
এর আগে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু নোম্যানসল্যান্ডে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় মিয়ানমারের মর্টারশেল নিক্ষেপে ইকবাল নামে এক রোহিঙ্গা নিহত হন। এ ছাড়া ওই ঘটনায় এক শিশুসহ পাঁচ রোহিঙ্গা নাগরিক আহত হয়েছে। তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সীমান্তে সহিংসতার ঘটনায় এক মাসেরও কম সময়ে ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে তিনবার ডেকে কড়া প্রতিবাদ করেছে ঢাকা। প্রতিবারই তার হাতে নোট ভার্বাল ধরিয়ে দেয়া হয়।
গত ৯ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার ভূখণ্ড থেকে ছোড়া একটি গুলি বাংলাদেশ সীমান্তের তুমব্রু এলাকায় এসে পড়ে। এর আগে, ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে। তার আগে, ২৮ আগস্ট বিকেলের দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা একটি মর্টারশেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় ঘুমধুমের তুমব্রু এসে পড়ে।