উজান ও টানা কয়েক দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে কুড়িগ্রামের তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাড়ছে অন্যান্য নদ-নদীর পানিও। এ ছাড়া তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষেরা।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিকেল ৩টার তথ্য অনুযায়ী কাউনিয়া পয়েন্টে এই নদীর পানি বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে তিস্তার অববাহিকার নিচু এলাকাগুলোতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
এদিকে, জেলার অভ্যন্তরীন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও বিপৎসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৪৭ সেন্টিমিটার, চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন- রামগড়ে মাছের পোনা ও প্রদর্শনী উপকরণ বিতরণ
তিস্তা পাড়ের বাসিন্দা আবদুল মোমেন বলেন, ‘তিস্তার পানিতে আমার আমনখেতে ডুবে গেছে। খুব চিন্তায় পড়েছি। এর আগেও দুবার ফসল নষ্ট হয়েছে।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য হিরা বলেন, ‘তিস্তার পানি গতকাল থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘড়িয়াল ডাঙা এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে অনেক মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। এভাবে ভাঙন অব্যাহত থাকলে, অনেকে বাড়িঘর জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাবে।’
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, ‘এ রকম বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে শীতকালীন মরিচ ও চালকুমড়াসহ বিভিন্ন শাকসবজির ক্ষতি হতে পারে। এ ছাড়া রোপা আমনেরও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।’
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রামে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তবে আগামীকাল মঙ্গলবারের মধ্যে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উজান ও দেশের অভ্যান্তরে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে মঙ্গলবারের মধ্যে পানি কমতে শুরু করবে। এই মুহূর্তে বন্যার কোন পূর্ভাবাস নেই।