গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের মহাসড়কে বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নারীসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ৩০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৭ জুলাই) দিবাগত রাত ১২টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কাটাখালি বালুয়া বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
শনিবার (০৮ জুলাই) সকালে গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের চকনদী গ্রামের জহুরুল ইসলাম (৪৫)। উপজেলার ধাপেরহাট এলাকার জাহিদ মিয়া (২৫) ও তার স্ত্রী ঝর্ণা বেগম (২২)।
আরও পড়ুন- গাইবান্ধায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১জন নিহত
স্থানীয়রা জানায়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা শ্যামলী পরিবহন ও রংপুর থেকে ঢাকাগামী যাত্রী ভর্তি একটি ট্রাক গোবিন্দগঞ্জের রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের বালুয়া বাজার এলাকায় পৌঁছালে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ট্রাকে থাকা তিন যাত্রী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এছাড়া আহত হন অন্তত ৩০ জন।
ট্রাকে থাকা যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঢাকায় যেতে ধাপেরহাটে ট্রাকটিতে ৪০ জনের বেশি নারী ও পুরুষ উঠেন। তারা সকলেই গামেন্টর্স কর্মী ও শ্রমজীবী মানুষ। ঈদের ছুটি শেষে তারা কর্মস্থলে ফিরছিলেন। কিন্তু পথে হঠাৎ করে বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালায়। তারা আহতদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন।
আরও পড়ুন- কুমিল্লায় কাভার্ড ভ্যানচাপায় মা-মেয়েসহ নিহত ৩
গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতা চালানো হয়। মরদেহ উদ্ধারের পাশাপাশি আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেই সঙ্গে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে দুর্ঘটনার শিকার বাস ও ট্রাকটি মহাসড়ক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
গোবিন্দগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট উদ্ধার কাজ করেছে। আহতরা গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল, বগুড়া শজিমেক হাসপাতালসহ স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শুক্রবার (৭ জুলাই) দেশের পাঁচ জেলায় ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে দুই জেলায় ইজিবাইকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে হওয়া এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক মানুষ। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি ঘটে যশোর-মাগুরা সড়কের লেবুতলা বাজারে।
যশোরে মাগুরাগামী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে ইজিবাইকের ওপর পড়েলে ৭ জনের মৃত্যু হয়। সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে বাসচাপায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার পাঁচ যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত অন্তত ১৫ জন। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত অন্তত ৩০ জন।
আরও পড়ুন- তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে, আতঙ্কে স্থানীয়রা
এছাড়া টাঙ্গাইলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে পৃথক তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় নারী ও শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন।
এদিকে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় নানার বাড়ি বেড়াতে এসে মামাতো ভাইয়ের নতুন মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আফজাল হোসেন (১৯) নামের এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
সাভারের বলিয়াপুর এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে পেছনে নিয়ন্ত্রণ হারানো আরেকটি বাসের ধাক্কায় এক পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই বাসে থাকা আরও কয়েকজন।