টানা কয়েকদিনের ভাড়ী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে আবারও বাড়ছে নদ নদীর পানি। নদীর পানি বাড়তে থাকায় প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল।
ঢলের পানি নদী উপচে তলিয়ে গেছে গ্রামীণ সড়ক। এরই মধ্যে সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার লঞ্চঘাট, বড়পাড়া, ইব্রাহিমপুর কাজির পয়েন্ট, ষোলঘর এলাকায় পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন শহরের বাসিন্দারা।
শনিবার (১ জুলাই) সকালে সুরমা নদীর ছাতক পয়েন্টে পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১০০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া, সুনামগঞ্জে পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন- বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
নদী ও হাওর পানিতে পরিপূর্ণ থাকায় বৃষ্টির পানি বের হতে না পেরে পৌর শহরের আরপিননগর, কাজীর পয়েন্ট, বড়পাড়া, পশ্চিম হাজীপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
এতে চলাচলে ভোগান্তিতে পড়েছেন সুনামগঞ্জবাসী। আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারতের চেরাপুঞ্জি ও সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকায় সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যার আশঙ্কা করছে বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
গতকাল সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জে ৩৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ২২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে ঢলের পানি সুরমা, জাদুকাটা ও সীমান্ত নদী দিয়ে এসে নিন্মাঞ্চলে প্রবেশ করতে শুরু করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের আজকের সকাল ৯টার তথ্য অনুযায়ী, সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত তিন দিনে সুনামগঞ্জে প্রায় ৬শ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
অব্যাহত বর্ষণ আর ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত হচ্ছে ফলে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আগামী ৪৮ ঘণ্টা বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে পাউবো।
আরও পড়ুন- রামগড় ৪৩ বিজিবি কর্তৃক ভারতীয় মদ আটক
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, ভারতে এবং সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাতের কারণে নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাওর ও নদীতে পানি ধারণ ক্ষমতা কম থাকায় আগামী ৪৮ ঘণ্টার ভেতরে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা দেখা দিতে পারে। বৃষ্টি কমলে আবার খুব দ্রুত এই পানি নেমেও যাবে।
বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে সুনামগঞ্জের জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। বাসা বাড়িতে পানি ঢুকলে কাছাকাছি স্কুলে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী।