খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলায় ভূমিদস্যু ও ইউনাইটেড পিপল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মদদে অবৈধভাবে বাঙালীদের ভূমিতে বসতি নির্মাণ এবং বেদখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
বুধবার (২১ জুন) সকাল ১০টার সময় রামগড় বাজারের খাগড়াছড়ি বাসস্ট্যান্ড এর সামনে হাইপ্লাজা প্রাঙ্গণে বাটনা শিবির ভূমি রক্ষা কমিটির উদ্যোগে নির্যাতিত গুচ্ছ গ্রামবাসী ও বাটনা শিবির ভূমি রক্ষা কমিটির ব্যানারে এ মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়।
বাটনা শিবির ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি মোঃ ইউনুছ এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বাটনা শিবির এলাকার ভূমি মালিকগণ ও গুচ্ছগ্রামবাসীরা তাদের ভূমি বে-দখল হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে দখলকৃত ভূমি উদ্ধারে সরকার ও প্রসাশনের হস্তক্ষেপ কামনা করে ছয়দফা দাবী পেশ করেন বক্তারা।
আরও পড়ুন- সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচনঃ প্রধানমন্ত্রী
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ মোল্লা বলেন, আমাদের নিজস্ব ভূমিতে বাগবাগিচা সজ্জিত ভূমিতে আমরা যেতে পারছি না, বহিরাগত উপজাতীয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমাদের ভূমিতে অবৈধভাবে জোর করে বসতি স্থাপন করেছে। ভূমির নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করেও আমাদের নামে রেকর্ডভুক্ত ভূমি বহিরাগত উপজাতীয় ভূমিদসারা আমাদের বাগবাগিচা করতে দিচ্ছে না! সরকার ও প্রসাশনের কাছে আমাদের ভূমি উদ্ধার এবং ভূমির নিরাপত্তা চাই।
সংগঠনের সভাপতি মোঃ ইউনুছ বলেন, আমাদের বাপ-দাদার বসত-ভিটা বাটনা শিবির এলাকা হতে সরকার ১৯৮৬ সালে উপজাতীয় সশস্ত্র শান্তিবাহিনীর আক্রমণ হতে রক্ষার্থে তৎকালীন বিডিআর ক্যাম্প সংলগ্ন তৈচালাপাড়ায় গুচ্ছগ্রামে নিয়ে আসে, সরকার ও প্রসাশনের পক্ষ থেকে তখন আমাদেরকে বলা হয়েছিলো পাহাড়ে কখনো শাস্তি পরিস্থিতি বিরাজমান হলে আবার আমাদের বসত-ভিটায় পুনর্বাসন করা হবে, কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয় ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকার ও জনসংহতি সমিতির শান্তি চুক্তির ২৫ বছর পার হয়ে গেলেও আমাদের বসত-ভিটার পুনর্বাসন করা হয়নি! আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বহিরাগত উপজাতীয় ভূমিদস্যু গণ অভ্যাহতভাবে আমাদের ভূমি বে-দখল এবং জোরপূর্বক অবৈধ বসতি স্থাপন করে চলছে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৮৬ হতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৩৮ বছর গুচ্ছগ্রাম রেশন কার্ডের আধাপ চাউল এবং গম খেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি যা বর্তমান সভ্য আধুনিক যুগেও আমদের মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। পরিবারে সদস্য বৃদ্ধি হলেও বৃদ্ধি হয়নি চাল ও গমের পরিমাণ।
এসময় মানববন্ধন থেকে বাটনা শিবির এলাকার গুচ্ছগ্রামবাসীদের পক্ষে সরকার ও প্রসাশনের নিকট ছয় দফা দাবি উস্থাপন করা হয়।
আরও পড়ুন- কুড়িগ্রামের তিস্তা পাড়ের মানুষের এ দুঃখের শেষ কোথায়?
দাবীগুলো হলো- বাটনা শিবির এলাকার গুচ্ছগ্রামবাসীদের সকল বে-দখলকৃত ভূমি উদ্ধার করতে হবে, বাটনা শিবির এলাকার সকল গুচ্ছগ্রামবাসীকে পূনর্বাসনের ব্যাবস্থা করতে হবে, বাটনাশিবির এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, বাদপড়া গুচ্ছগ্রামাবাসীদের তালিকা তৈরি করে রেশন সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, গুচ্ছগ্রামবাসীদের স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সহ সরকারি-বেসরকারি চাকুরীতে অগ্রাধিকার দিতে হবে, বাটনাশিবির এলাকার গুচ্ছগ্রামবাসীদের জন্য শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
এসময় বাটনা শিবির এলাকার ভূমি রক্ষা কমিটির নেতাকর্মীসহ ভূমি হারা ও অধিকার বঞ্চিত সর্বোস্তরের লোকজন মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিত অংশ নেন।