সরকার গত ১৩ বছরে কৃষিতে ৯৭ হাজার ৮৭৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ভর্তুকি দিয়েছে বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। এর মধ্যে সারে ভর্তুকির ছিল ৯৫ হাজার ১৬১ কোটি ৫ লাখ এবং বিদ্যুতে এক হাজার ৯৬২ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
রবিবার (৪ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপন করা হলে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান কৃষিমন্ত্রী।
কৃষিমন্ত্রীর জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ১৬৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়। এর মধ্যে সারে ১৪ হাজার ৯৪১ কোটি ৬০ লাখ এবং বিদ্যুতে ছিল ২২৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সরকার কৃষিতে সর্বনিম্ন ভর্তুকি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেয়। ওই বছর ৩ হাজার ৪৭০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীপুরে লব্ধ’র নতুন কমিটি গঠন
সরকার দলীয় সংসদ এ কে এম রহমতুল্লাহ’র আরেক প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষিতে ভর্তুকির জন্য ১৬ হাজার কোটি বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক মনে কনে বিশ্ববাজারে পরিস্থিতির কারণে এ ব্যয় আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘উৎপাদন খরচ হ্রাসের পদক্ষেপ হিসেবে কয়েক দফায় সারের দাম কমিয়ে টিএসপি ৮০ হতে ২৭ টাকা, ডিএপি ৯০ হতে ২১ টাকা এবং এমওপি ৭০ টাকা থেকে ২০ টাকায় নির্ধারণ করেছে সরকার। রাসায়নিক সারের ভর্তুকি প্রদান অব্যাহত রাখার ফলে সর্বস্তরের কৃষক স্বল্প মূল্যে জমিতে সুষম সার প্রয়োগ করতে পারছেন। সারের পাশাপাশি বিদ্যুতে ২০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া হয়।’
কৃষিমন্ত্রী জানান, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের জন্য স্থানভেদে কৃষিযন্ত্রের ক্রয় মূল্যের ওপর ৫০ শতাংশ থেকে ৭০ শতাংশ ভর্তুকি প্রদানসহ বিভিন্ন সময়ে প্রণোদনা প্রদান করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- সোমবার থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিল কৃষি মন্ত্রণালয়
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে একটি টেকসই সার বিতরণ ব্যবস্থাপনা নেটওয়ার্ক বিরাজমান থাকায় নিরবচ্ছিন্নভাবে সারসহ কৃষি উপকরণ ভর্তুকি মূল্যে সরবরাহ করা যাচ্ছে। কৃষক সঠিক সময়ে সুলভ মূল্যে সার পাওয়ায় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দেশ খাদ্য-শস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।’
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমান রাঙ্গার প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের বর্তমান স্থিতির পরিমাণ এক হাজার ৪৩৫ কোটি ৯০ লাখ ৮৯ হাজার টাকা।
উল্লেখ্য, ২০০৯-১০ অর্থবছর হতে ২০২২-২৩ অর্থ বছরসহ ১৪টি অর্থবছরে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডে ৩ হাজার ৯ শত ১৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- বাজেট ২০২৩-২৪ঃ স্মার্ট বাংলাদেশে একধাপ এগিয়ে যাবে দেশ
মন্ত্রী জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিলে বরাদ্দকৃত অর্থ এবং তহবিল থেকে প্রাপ্ত সুদ দিয়ে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ৩ হাজার ৬৬৯ কোটি ৬ লাখ ৩২ হাজার টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সরকারি ৮৫৬টি এবং বেসরকারি ৬১টি সর্বমোট ৯১৭টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রকল্প হলো— নদীর তীর সংরক্ষণ, বেড়ি বাঁধ নির্মাণ/পুনর্নির্মাণ, সাইক্লোন সেল্টার ইত্যাদি।
তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ৪৮৬টি এবং বেসরকারি ৫৭টিসহ মোট ৫৪৩টি প্রকল্প শেষ হয়েছে। সরকারি ৩৭০টি প্রকল্প চলমান রয়েছে।